যুদ্ধবন্দি: আবু আল-আস, জয়নব বিনতে মুহাম্মদের স্বামী | বদরের যুদ্ধ-৬ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

যুদ্ধবন্দি: আবু আল-আস, জয়নব বিনতে মুহাম্মদের স্বামী | বদরের যুদ্ধ-৬,আমরা আগের পর্বে আলোচনা করেছি, আল্লাহ তায়ালা যুদ্ধবন্দিদের সম্পর্কে নাজিলকৃত আয়াতে তাদের ওপর করুণা করার চেয়ে কঠোরতা প্রদর্শন করাকে শ্রেয়তর বলে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু এর পেছনের কারণটি কী?

আল্লাহ বলেছেন, “দেশে সম্পূর্ণভাবে শত্ৰুনিপাত না করা পর্যন্ত বন্দি রাখা কোনো নবির পক্ষে সমীচীন নয়।” [৮:৬৭] নিজে দুর্বল অবস্থানে থেকে কাউকে ক্ষমা করার চেয়ে ক্ষমতা থাকাকালীন কাউকে ক্ষমা করলে তা বেশি কার্যকর; এটিই প্রকৃত ক্ষমা। সুতরাং আল্লাহ ইঙ্গিত দিয়েছেন, দুর্বল অবস্থান থেকে যুদ্ধবন্দিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার মাধ্যমেই নিজেকে আরও শক্তিশালী করা সম্ভব হতো, এবং তা-ই হতো বেশি যুক্তিযুক্ত।

 

যুদ্ধবন্দি: আবু আল-আস, জয়নব বিনতে মুহাম্মদের স্বামী | বদরের যুদ্ধ-৬ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

[আনুষঙ্গিক বিষয়: সহনশীলতার নামে এক গালে চড় খেলে ‘অন্য গাল পেতে দেওয়া’র ধারণা নিতান্তই অবাস্তব একটি দর্শন। এটি সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য কোনো সমাধান নয়। প্রতিবারই আপনি মানুষকে তার দোষের জন্য ক্ষমা করে গেলে মানুষ কেবল আপনার কাছ থেকে সুবিধা নিতে থাকবে। এই মতাদর্শ পুরোপুরি অনুসরণ করছে তেমন উদাহরণ সমাজে নেই। ব্যক্তিপর্যায়ে এই দর্শন কিছু কিছু ক্ষেত্রে কাজ করতে পারে, কিন্তু সামষ্টিকভাবে এর প্রয়োগ এক কথায় অসম্ভব। ইসলামে সাধারণভাবে ক্ষমা ও করুণার নীতি অনুসরণ করা হলেও মাঝে মাঝে আপনাকে ন্যায়বিচারের স্বার্থে শক্ত হতে হবে। কেউ অন্যায়ভাবে আপনার ক্ষতি করতে চাইলে তাকে বুঝিয়ে দিতে হবে, ‘আমার সাথে ঝামেলা করতে এসো না, তাতে সুবিধা হবে না । ‘ ]

যুদ্ধবন্দি: আবু আল-আস, জয়নব বিনতে মুহাম্মদের স্বামী | বদরের যুদ্ধ-৬ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

আবু আল-‘আস ইবনুল রাবি ছিলেন নবিজির (সা) জামাতা, নবি-কন্যা জয়নবের স্বামী। আবার তাঁর মা ছিলেন খাদিজার (রা) বড় বোন হালা। সেই সম্পর্কে  খাদিজা (রা) ছিলেন আবু আল আসের আপন খালা। জয়নব ও আল-আসের বিয়ে হয়েছিল ইসলাম-পূর্ব সময়ে। জয়নবের কাছে আবু আল-‘আস ছিলেন একজন প্রেমময় ও দায়িত্বশীল স্বামী।

 

islamiagoln.com google news
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

বদরের যুদ্ধে আবু আল-‘আস মুসলিমদের বিরুদ্ধে লড়াই করে বন্দি হন। তার জন্যও মক্কা থেকে মুক্তিপণ পাঠানো হয়েছিল। জানা যায়, মুক্তিপণের পরিমাণ পূর্ণ করতে জয়নব নিজের কিছু গহনাও দিয়ে দেন। গহনাগুলোর মধ্যে ছিল একটি ‘নেকলেস’ বা কণ্ঠহার যা খাদিজা (রা) পরতেন; জয়নবকে তিনি তা বিয়েতে উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন। কণ্ঠহারটি দেখতে পেয়ে নবিজি (সা) আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন, সহসাই তাঁর অন্তরে খাদিজার (রা) স্মৃতি জেগে ওঠে।

 

যুদ্ধবন্দি: আবু আল-আস, জয়নব বিনতে মুহাম্মদের স্বামী | বদরের যুদ্ধ-৬ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

নবিজি (সা) তখন আবু আল-‘আসের বন্দিকারীদের অনুরোধ করেন, “তোমরা যদি সঠিক মনে কর, তাহলে এই জিনিসটা (কণ্ঠহার) ছাড়াই কি তাকে মুক্তি দিতে পার?” নবি করিমের (সা) অনুরোধ কি কেউ অগ্রাহ্য করতে পারে? সেই মুক্তিপণ ছাড়াই তাঁকে ফেরত পাঠানো হয়। আমরা এই ঘটনা পরে আরও বিস্তারিতভাবে জানব।

আরও পড়ুনঃ

Leave a Comment