যুদ্ধবন্দি: আমর ইবনে আবি সুফিয়ান | বদরের যুদ্ধ-৬ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

যুদ্ধবন্দি: আমর ইবনে আবি সুফিয়ান | বদরের যুদ্ধ-৬, আবু সুফিয়ান ছিল কুরাইশদের অবিসংবাদিত নেতা। বদরের যুদ্ধের আগে তার নেতৃত্বেই বাণিজ্যিক কাফেলাটি সিরিয়া থেকে ফিরছিল। যেহেতু তার অনুরোধে কাফেলা রক্ষা করতে গিয়েই এই বিপর্যয়, তাই পরাজয়ের গ্লানি তাকেই সবচেয়ে বেশি কাবু করেছিল। আবু সুফিয়ানকে তার ছেলে আমরের মুক্তিপণ দিতে বলা হলে, সে বলল, “তারা কি আশা করে আমি (আমরকে মুক্ত করতে) আমার টাকা দেব যেখানে যুদ্ধে আমার রক্ত ঝরেছে (অর্থাৎ, আমার আরেক পুত্র হানজালা বদরে মারা গিয়েছিল)? যতক্ষণ তারা চায়, সে (আমর) তদের হাতে থাকুক (অর্থাৎ, আমি আমার পুত্রের জন্য টাকা দেব না)।”

 

যুদ্ধবন্দি: আমর ইবনে আবি সুফিয়ান | বদরের যুদ্ধ-৬ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

যুদ্ধবন্দি: আমর ইবনে আবি সুফিয়ান | বদরের যুদ্ধ-৬ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

আৰু সুফিয়ান এই সিদ্ধান্তটি নিতে পেরেছে, কারণ সে বিশ্বাস করত যে মুসলিমরা তার পুত্রকে হত্যা কিংবা নির্যাতন করবে না। সে ইসলাম ও মুহাম্মদকে (সা) যতই ঘৃণা করুক না কেন, মনের গভীরে সে জানত যে তার পুত্র নিরাপদেই রয়েছে। পরে আবু সুফিয়ান তার পুত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্য বড় ধরনের চাতুর্যের আশ্রয় নিয়েছিল যা ইসলাম ও জাহেলি নীতি দুটোরই পরিপন্থী। বদরের যুদ্ধের অনেক মাস পরে সাদ ইবনুল নুমান নামের মদিনার এক প্রবীণ আনসারি ব্যবসার উদ্দেশ্যে মক্কায় যান।

 

islamiagoln.com google news
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

সেখানে ব্যবসার কাজের পাশাপাশি তাওয়াফ ও ওমরা করার ইচ্ছা জাগে তাঁর মনে। আমরা জানি, মক্কা ছিল হারাম, যা কুরাইশরা সবসময় মেনে চলত। কিন্তু এই আনসারি মক্কায় এলে আৰু সুফিয়ান তাঁকে প্রকাশ্য দিবালোকে অপহরণ করে, তারপর মুসলিমদের খবর পাঠায়, “তোমরা আমার পুত্রকে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত আমি এই ব্যক্তিকে মুক্তি দেব না।”

 

যুদ্ধবন্দি: আমর ইবনে আবি সুফিয়ান | বদরের যুদ্ধ-৬ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

এই পরিস্থিতিতে সাদ ইবনুল নুমানের বংশের লোকজন নবি করিমের (সা) কাছে এসে অপহরণের ঘটনা খুলে বললে তিনি আবু সুফিয়ানের পুত্রকে মুক্তিপণ ছাড়াই ছেড়ে দেন। এখানে আমরা আবারও কুরাইশদের দ্বিমুখী চরিত্রের পরিচয় পাই। যখন সাহাবিরা যুদ্ধের সময় ভুল করে একজনকে হত্যা করেছিলেন, তখন তারা রেগে গিয়েছিল। কিন্তু যখন তাদের নেতা কাবা শরিফের সামনে দিনের আলোতে কাউকে অপহরণ করে নিয়ে যায়, তখন কেউ একটা শব্দও করেনি। যা-ই হোক, নবিজি (সা) আবু সুফিয়ানের অন্যায় কার্যকলাপকে মেনে নেন, কারণ সাদ ইবনুল নুমানের কোনো দোষ ছিল না; তাঁকে মুক্ত করে আনাও ছিল খুব গুরুত্বপূর্ণ ।

আরও পড়ুনঃ

Leave a Comment