আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা ও আল্লাহর ভালবাসা | হাদিস শরিফ

আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা ও আল্লাহর ভালবাসা আজকের আলোচনার বিষয়। আল্লাহ তায়ালার জন্য ভালোবাসা ও তাঁর পক্ষ থেকে ভালোবাসা [ Love from Allah Ta’ala & Love of Allah Ta’ala ] ক্লাসটি হাদিস শরীফ [ Hadith Sharif ] এর পাঠ।

আল্লাহ তায়ালার জন্য ভালোবাসা ও তাঁর পক্ষ থেকে ভালোবাসা [ Love from Allah Ta’ala & Love of Allah Ta’ala ] ক্লাসটি মাদ্রাসার দাখিল ১০ম শ্রেণীর [ Madrasa Dakhil Class 10 ] হাদিস শরীফ [ Hadith Sharif ] বিষয়ের ১৫ তম অধ্যায় [ Chapte 15 ] এর পাঠ। হাদিস শরীফ [ Hadith Sharif ] এর এই বিষয়টি আলিয়া মাদ্রাসার দাখিল [ Alia Madrasa Dakhil ] এর ১০ম শ্রেণী [ Dakhil Class 10 ] তে পড়ানো হয়।

 

 

আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা ও আল্লাহর ভালবাসা

 

আল্লাহর ভালবাসা:

আল্লাহর প্রতি ভালবাসার অর্থ হলো অন্তরে তাঁর প্রতি ঘনিষ্ঠতা সৃষ্টি হওয়া ও ধাবিত হওয়া, এবং আল্লাহর চাওয়া ও নির্দেশিত বিষয়ের ব্যপারে ইতিবাচক সাড়া দেয়া। আর সর্বোপরি অন্তর জুড়ে আল্লাহর স্মরণ বিরাজমান ও প্রভাব বিস্তার করে থাকা।

 

মুসলিমগণের পারস্পারিক

 

আল্লাহর মুহাব্বতের হাকীকত

আল্লাহকে মুহাব্বত করা মানে আল্লাহর ইবাদাতকে ও তাঁর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের প্রতি অনুরক্ত হওয়া। আল্লাহর নির্দেশ পালন ও নিষিদ্ধ বিষয়াবলী পরিহারই মূলত আল্লাহকে ভালবাসা ও তাঁকে প্রেমপূর্ণ শ্রদ্ধা নিবেদনের নামান্তর। আর এই আন্তরিক ভালবাসাই হলো তাওহীদের আলামত ও প্রভাব। এর মাধ্যমেই অগণিত মর্যাদা ও ফযীলত অর্জিত হয়। আল্লাহকে মুহাব্বত করার অর্থ হলো তিনি যে সকল স্থান, সময়, ব্যক্তি, কর্ম ও কথা সহ তিনি যেগুলোকে ভালোবাসেন সেগুলোকে ভালোবাসা ও পছন্দ করা।

আল্লাহর ভালবাসা হতে হবে খাঁটি ও একনিষ্ঠভাবে। আর আল্লাহর ভালবাসা স্বভাবজাত ভালবাসার পরিপন্থি নয়। যেমন সন্তানের প্রতি পিতার মুহাব্বত, পিতার প্রতি সন্তানের মুহাব্বত, শিক্ষকের প্রতি ছাত্রের মুহাব্বত এবং খাদ্য, পানীয়, বিবাহ, পোশাক, বন্ধুবান্ধব ইত্যাদির প্রতি মুহাব্বত। এর কোনটিই আল্লাহকে ভালবাসার পরিপন্থি কিংবা বিপরীত নয়।

নিষিদ্ধ ভালোবাসা আল্লাহর ভালবাসার সঙ্গে শিরকের অনুরূপ। যেমন মুশরিকদের সাথে তাদের মূর্তি ও মনগড়া উপাস্যদের কারণে মুহাব্বত করা এবং নিজের প্রবৃত্তির পছন্দকে আল্লাহর পছন্দের উপর প্রাধান্য দেওয়া, অথবা আল্লাহ যে সব, সময়, স্থান, ব্যক্তি, কথা ও কাজকে অপছন্দ করেন, সেগুলোকে পছন্দ করা। এসবই নিষিদ্ধ ভালবাসা। আল্লাহ তা’আলা বলেন: {আর কোন লোক এমনও রয়েছে যারা অন্যান্যকে আল্লাহর সমকক্ষ সাব্যস্ত করে এবং তাদের প্রতি তেমনি ভালোবাসা পোষণ করে, যেমন আল্লাহর প্রতি ভালবাসা হয়ে থাকে। কিন্তু যারা আল্লাহর প্রতি ঈমানদার তাদের ভালোবাসা ওদের তুলনায় বহুগুণ বেশী।}
[সূরা: আল-বাক্বারাহ, আয়াত: ১৬৫]

আল্লাহর মুহাব্বতের ফযীলতসমূহ:

১- নিশ্চয় আল্লাহর মুহাব্বতই হলো প্রকৃত একত্ববাদ। একত্ববাদের রূহ হলো, এক আল্লাহর প্রতি খালেছভাবে মুহাব্বত করা; বরং এটাই ইবাদাতের হাকীকত। যতক্ষণ পর্যন্ত প্রভুর প্রতি বান্দার মুহাব্বত পরিপূর্ণ না হবে এবং সব কিছুর মুহাব্বতের চেয়ে আল্লাহর প্রতি বান্দার মুহাব্বত অগ্রগণ্য ও প্রাধান্য না পাবে ততক্ষণ পর্যন্ত তার একত্ববাদে বিশ্বাস পরিপূর্ণ হবে না। আর এই আল্লাহপ্রীতিই তার মাঝে শাসন ও কতৃত্ব করবে। অর্থাৎ বান্দার অন্যসব পছন্দ অপছন্দ হবে আল্লাহর পছন্দ অপছন্দের ভিত্তিতে। আর এতেই সে সফল ও সার্থক হতে পারবে।

২. বিপদের সময় আল্লাহ প্রেমিক, প্রশান্তি লাভ করবে। অনন্তর আল্লাহর প্রেমিক মুহাব্বতের এমন অনাবিল স্বাদ পাবে যা তাকে মুসিবতের কথা ভুলিয়ে দেবে। আর কঠিনতর বিপদাপদ ও তার উপর অতি সহজ বলে মনে হবে।

আল্লাহকে ভালবাসা, তাঁকে ভয় করা এবং তাঁর কাছে রহমতের আশা করার চেয়ে শ্রেষ্ঠ ইবাদাত নেই। আল্লাহ ও তাঁর সাথে সাক্ষাতের আকাঙ্খা কোমল বাতাসের মত যা অন্তরের উপর প্রবাহিত হলে দুনিয়ার মোহ কেটে যায়।

৩- নেয়ামতের পরিপূর্ণতা ও সীমাহীন আনন্দ লাভ: এটা আল্লাহর প্রতি মুহাব্বত ছাড়া অর্জন হয় না। আর তাঁর প্রতি মুহাব্বত ও তাঁর দিকে অগ্রসর হওয়া ছাড়া অন্তর স্বকীয়তা লাভ করে না। অন্তর পরিতৃপ্ত হয় না এবং পূর্ণতা পায় না। যদি সে আনন্দের সকল উপকরণ পেয়ে যায় তবুও আল্লাহর মুহাব্বত ছাড়া প্রশান্তি পাবে না। সুতরাং আল্লাহর মুহাব্বত নফসের জন্য নেয়ামত স্বরূপ। সুস্থ অন্তর, পবিত্র মানসিকতা, পরিশুদ্ধ চিন্তাশক্তির কাছে আল্লাহর প্রতি মুহাব্বত, তাঁর ঘনিষ্ট হওয়া, এবং তাঁর সাক্ষাতের আগ্রহের চেয়ে বেশী সুমিষ্ট, সুস্বাধু, আনন্দদায়ক নেয়ামত আর কিছু নেই।

আল্লাহর মুহাব্বতের মাঝে মুমিন যে সৌন্দর্য খুঁজে পাবে তা সকল সৌন্দর্যের উর্ধ্বে। আর এর মাধ্যমে যে নেয়ামত অর্জিত হয় তা সর্বদিক দিয়ে অধিক পরিপূর্ণ। এবং এরচেয়ে উপভোগ্য কোন জিনিস পৃথিবীতে নেই। «তিনটি জিনিস যার মধ্যে পাওয়া যাবে সে প্রকৃত ঈমানের স্বাদ পেয়েছে। আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল অন্য সবকিছু থেকে তার কাছে প্রিয় হবে। সে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কোন ব্যক্তিকে ভালবাসে। আল্লাহ তাকে কুফরী থেকে মুক্তি দেয়ার পর পুনর্বার কুফরীতে ফিরে যাওয়া আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার মতোই অপছন্দ করে।»

 

আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা

আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা ও আল্লাহর ভালবাসা নিয়ে বিস্তারিত ঃ

 

আরও দেখুনঃ 

Leave a Comment