কাব ইবনুল আশরাফের কাহিনির সারাংশ | কাব ইবনুল আশরাফের প্রাণনাশ কারকারাত | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

কাব ইবনুল আশরাফের কাহিনির সারাংশ | কাব ইবনুল আশরাফের প্রাণনাশ কারকারাত, যুদ্ধাভিযানগুলোর প্রথমটিকে কারকারাত আল-কুদরের অভিযান বলা হয়। মুসলিমদের কারণে মদিনার পার্শ্ববর্তী কয়েকটি মুশরিক উপজাতির ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিল। ব্যবসা বন্ধ হওয়ার পরোক্ষ কারণ ছিল বদরের যুদ্ধ এবং তৎসংশ্লিষ্ট কুরাইশদের কাফেলার পথ পরিবর্তন করা। ফলে বদরের যুদ্ধের মাত্র সাত দিন পরে আরবের দুটি বড় উপজাতি বনু সেলিম ও গাতাফান মদিনা আক্রমণ করার জন্য ২০০ লোকের একটি দল নিয়ে রওনা দেয় । গাতাফান ছিল পুরো আরব অঞ্চলের মধ্যে অন্যতম বৃহত্তম উপজাতি ।

এই পরিপ্রেক্ষিতে নবি করিম (সা) তাদের পাল্টা আক্রমণ করার পরিকল্পনা করেন । তিনি মুসলিমদের একটি ছোট দল নিয়ে শহর থেকে বেরিয়ে আসেন। বনু সেলিম ও গাতাফানের বাহিনী সংখ্যায় বেশি হলেও মুসলিম বাহিনীকে দেখে ভয় পেয়ে তাদের তাঁবু, জিনিসপত্র, উট সবকিছু ফেলে পালিয়ে যায়। তাদের ফেলে যাওয়া সম্পদের পরিমাণ এত বেশি ছিল যে, মুসলিমদের মধ্যে যাঁরা এই অভিযানে অংশগ্রহণ করেছিলেন তাঁরা প্রত্যেকেই ভাগে দুটি করে উট পেয়েছিলেন।

 

কাব ইবনুল আশরাফের কাহিনির সারাংশ | কাব ইবনুল আশরাফের প্রাণনাশ কারকারাত | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

পালানোর সময় ইয়াসার নামের একজন আবিসিনীয় দাস মুসলিম বাহিনীর হাতে ধরা পরে। তাকে বন্দি করে নিয়ে আসার অল্প সময়ের মধ্যেই সে ইসলাম গ্রহণ করে। জানা যায়, মুসলিমদের সদাচরণে মুগ্ধ হয়েই সে ধর্মান্তরিত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। যে সাহাবি তাকে বন্দি করেছিলেন তিনি নবিজির (সা) কাছে পেশ করেন, “হে আল্লাহর রসুল, সে (ইয়াসার) এখন থেকে আপনার।” কিন্তু নবিজি (সা) ইয়াসারকে মুক্ত করে দেন। ইয়াসার মুক্ত হলেও স্বেচ্ছায় নবিজিকে (সা) সেবা করার জন্য তাঁর কাছেই থেকে যান।

যে কোনো যুদ্ধের পরে নবিজির (সা) যুদ্ধের স্থানে আরও তিন দিন শিবিরে অবস্থান করতেন। বদরের যুদ্ধ থেকেই তিনি এই নিয়ম শুরু করেন। এবারও তিনি তা-ই করলেন। সেখানে অবস্থানকালে তিনি এই অভিযানে শত্রুপক্ষের পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি সাহাবিদের কাছে এভাবে ব্যাখ্যা করেন, “আমাকে আল্লাহ তায়ালা এমনভাবে সাহায্য করেছেন যে, আমি এক মাসের যাত্রার দূরত্বে থাকলেও আমার শত্রুরা আতঙ্কগ্রস্ত হবে।” এই হাদিসটি সহিহ বুখারিতে লিপিবদ্ধ আছে।

 

islamiagoln.com google news
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

কাব ইবনুল আশরাফের কাহিনির সারাংশ | কাব ইবনুল আশরাফের প্রাণনাশ কারকারাত | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

এই ঘটনা যেভাবে ঘটেছিল সেভাবেই বলা দরকার। এটি ছিল একটি রাজনৈতিক ঘটনা যা নবি করিম (সা) অনুমোদন করেছিলেন। এটি ছিল তাঁর সময়ের রীতিনীতি ও রাজনৈতিক মূল্যবোধের সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ। কাব সে সময় রাজনৈতিকভাবে হুমকি হয়ে উঠেছিল। সে শুধু ইসলামকে প্রত্যাখ্যান করেনি, সংবিধান লঙ্ঘন করে কুরাইশের সঙ্গে জোটও গঠন করেছিল। তার লেখা কবিতাগুলো এতটাই কুরুচিপূর্ণ ছিল যে তা ধৈর্য ও নৈতিকতার সীমা অতিক্রম করে গিয়েছিল। বিশ্বাসঘাতকতার এই স্তরে পৌঁছানো পর্যন্ত সে যা যা করেছে। তার পরিণাম কী হতে পারে তা সে ভালো করেই জানত। এমনকি তার স্ত্রীও এসব কাজের ফলে সম্ভাব্য বিপদগুলো উপলব্ধি করতে পেরেছিল।

 

কাব ইবনুল আশরাফের কাহিনির সারাংশ | কাব ইবনুল আশরাফের প্রাণনাশ কারকারাত | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

ইসলামের বাইরের উৎস: নরম্যান আর্থার স্টিলম্যান একজন খ্যাতিমান ইতিহাসবিদ। তিনি ইহুদি এ ইসলামি সংস্কৃতি ও ইতিহাসের বিশেষজ্ঞ। গত কয়েক বছর ধরে তিনি ‘এনসাইক্লোপেডিয়া অফ জিউ ইন দ্য ইসলামিক ওয়ার্ল্ড”- এর নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন। এই ঘটনা সম্পর্কে তিনি বলেছেন, “মুহাম্মদ সেই সময়ের আরবদের সামাজিক রীতি অনুযায়ীই কাজ করেছিলেন যেখানে গোষ্ঠীর সম্মানের জন্য প্রতিশোধ নেওয়া ছিল সামাজিক দাবি। ” এই বক্তব্য সম্ভাব্য সর্বোচ্চ একাডেমিক সূত্র থেকে এসেছে।

আরও পড়ুনঃ

Leave a Comment