ইসলাম-পূর্ব আরব: ইব্রাহিম (আ) ও ইসমাইলের (আ) ধর্ম | ইসলাম-পূর্ব বিশ্বে ধর্মীয় পরিস্থিতি, মহানবি মুহাম্মদের (সা) আগমনের পূর্বের আরব ও বিশ্বের ধর্ম পরিস্থিতি বা অবস্থা সম্পর্কে আলোকপাত করব। ইসলাম-পূর্ব আরব ও তার পারিপার্শ্বিকতা সম্পর্কে বুঝতে পারলে ইসলাম আগমনের গুরুত্ব আমরা আরও ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারব। একই সঙ্গে উপলব্ধি করতে পারব নবি করিম (সা) বিশ্বের জন্য কী কল্যাণ নিয়ে এসেছিলেন।
Table of Contents
ইসলাম-পূর্ব আরব: ইব্রাহিম (আ) ও ইসমাইলের (আ) ধর্ম | ইসলাম-পূর্ব বিশ্বে ধর্মীয় পরিস্থিতি | মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ জীবন
আমরা জানি, প্রত্যেক জাতির কাছেই আল্লাহ তায়ালা অন্তত একজন করে নবি পাঠিয়েছেন। আরবদের নবি ছিলেন হজরত ইব্রাহিম (আ)। তিনি বেশ কিছু ধর্মীয় অনুশাসনের প্রবর্তন করেছিলেন, যা মহানবি মুহাম্মদের (সা) আগমন পর্যন্ত কয়েক হাজার বছর ধরে বলবৎ ছিল। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে:
১) মক্কাকে পবিত্র হিসেবে বিবেচনা করা:
আমরা কাবা ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকাকে ‘হারাম’ নামে অভিহিত করি, যা মক্কায় অবস্থিত। হারাম শব্দের অর্থ নিষিদ্ধ। একে হারাম বলা হয় এজন্য যে, এর নির্ধারিত সীমানার বাইরে হালাল (অনুমোদিত) এমন অনেক কাজ এর অভ্যন্তরে নিষিদ্ধ। উদাহরণস্বরূপ, মক্কায় প্রাণী শিকারের অনুমতি নেই; এমনকি কোনো গাছের পাতাও ছেঁড়া যাবে না। আল্লাহ পবিত্র কোরানে বলেছেন: “নিশ্চয়ই মানবজাতির জন্য সর্বপ্রথম যে গৃহ (প্রার্থনাগৃহ) প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তা ছিল বাক্কার (মক্কার অপর নাম), তা আশীর্বাদপ্রাপ্ত ও বিশ্বজগতের দিশারি। ….আর যে সেখানে প্রবেশ করবে সে নিরাপদ হয়ে যাবে।” [সুরা আলে-ইমরান, ৩:৯৬-৯৭ ইবনে আব্বাস (রা) বলেছেন, “কোনো ব্যক্তি তার পিতার খুনিকে তাওয়াফ করতে দেখলেও সে এমনকি তার (খুনির) মাথার চুলও স্পর্শ করতে পারবে না।” কারণ এটা ‘হারাম’ এলাকায়।
২) কাবার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা।
৩) চারটি পবিত্র মাস প্রবর্তন করা:
এই মাসগুলোতে সব ধরনের শত্রুতা বন্ধ করতে হবে, কোনো প্রকার যুদ্ধ-বিগ্রহে লিপ্ত হওয়া যাবে না, এবং প্রত্যেককে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে হবে।
৪) হজ:
পবিত্র হজের সমস্ত আচার ও আনুষ্ঠানিকতা, যেমন তাওয়াফ করা, সায়ি করা, হারামের কাছাকাছি পশু কোরবানি দেওয়া, কোরবানির জন্য নির্দিষ্ট প্রাণীকে সাজানো ইত্যাদি । অনেক অমুসলিম গবেষকের মতে এগুলো পৌত্তলিক সংস্কৃতি থেকে নেওয়া হয়েছে। এটি আসলে দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপার। তারা ঠিকমতো লক্ষ করছে না যে, এ বিষয়গুলো ইব্রাহিমের (আ) কাছ থেকে এসেছে। কিছু অমুসলিম গবেষক বলে থাকেন, মুহাম্মদ (সা) পৌত্তলিকতা থেকে কিছু রীতি গ্রহণ করেছিলেন এবং পরে তাতে তিনি নিজে কিছু যোগ করেন। কিন্তু আমরা (মুসলিমরা) বিশ্বাস করি যে মুহাম্মদ (সা) বরং ইব্রাহিমের (আ) মূল শিক্ষাগুলো মেনে চলেছিলেন এবং পৌত্তলিকতা সম্পূর্ণভাবে পরিহার করেছিলেন।
আরো পড়ুনঃ