আবদুল্লাহ ইবনে উবাইয়ের আসল রূপ প্রকাশ | আয়েশার (রা)-এর ওপর মিথ্যা অপবাদ-১, আবদুল্লাহ ইবনে উবাই যখন শুনল যে মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে বিরোধ মিটে গেছে, তখন সে কিছুটা হতাশ ও বিরক্ত হলো। সে চেয়েছিল খারাপ কিছু ঘটুক। সে বলল, “তারা (মুহাজিররা) সংখ্যায় এত কম হওয়া সত্ত্বেও আমাদের সাথে পাল্লা দিতে এসেছে। ব্যাপারটা এমন হলো যে তুমি তোমার কুকুরকে খাইয়ে এমন মোটাতাজা করেছ যে সে এখন তোমাকে কামড় দিতে এসেছে।”
আবদুল্লাহ ইবনে উবাইয়ের আসল রূপ প্রকাশ | আয়েশার (রা)-এর ওপর মিথ্যা অপবাদ-১ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

এ কথায় আবদুল্লাহ ইবনে উবাই আসলে নবিজিকে (সা) কুকুরের সঙ্গে তুলনা করছে। সে আরও বলল, “আল্লাহর কসম, আমরা যদি মদিনায় ফিরে যাই তাহলে সম্মানিতরা (মূল ইয়াসরিববাসীরা) অবশ্যই নিকৃষ্টদের (মুহাজিরদের) বহিষ্কার করবে।” তারপর সে নিজের লোকদেরকে দোষারোপ করে বলল, “তোমরা নিজেরাই এসব ঝামেলা ডেকে এনেছ। তোমরা তাদের তোমাদের দেশে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছ, তাদের টাকা-পয়সা দিয়েছ, নিজেদের সম্পদের ভাগ দিয়েছ। তোমরা এখন যদি তাদের এসব দেওয়া বন্ধ কর, তাহলে তারা নিজেদের বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হবে।”
সে তাঁবুতে বসে যাদের সঙ্গে এসব কথা বলছিল তাদের বেশিরভাগই ছিল মুনাফেক এবং তার অনুসারী। কিন্তু সেখানে উপস্থিত ছিলেন, জায়েদ ইবনে আরকাম নামের এক তরুণ, বয়স অল্প হলেও তাঁর ইমান ছিল অত্যন্ত দৃঢ়। তিনি এই সুস্পষ্ট কুফরি মোটেই মেনে নিতে পারেননি। তাই তিনি তাঁর চাচার কাছে ছুটে গিয়ে বলেন, “আমি অমুককে এই এই কথা বলতে শুনেছি।” তখন তাঁর চাচা তাঁকে নবিজির (সা) কাছে নিয়ে যান। তিনি আবদুল্লাহ ইবনে উবাইয়ের কথাগুলো নবিজিকে (সা) হুবহু জানিয়ে দেন।

নবিজি (সা) আবদুল্লাহ ইবনে উবাইকে ডেকে এনে জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি কি এসব কথা বলেছ?” সে (আবদুল্লাহ ইবনে উবাই) বারবার কসম কেটে বলল যে, সে মোটেই এসব বলেনি। নবিজি (সা) তার অজুহাত মেনে নেন; কারণ ওই কথাগুলো না বলে থাকলেই ভালো । এই ঘটনার পরে মদিনার আনসার ও মুনাফেকদের মধ্যে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়। নবিজির (সা) সঙ্গে কথা শেষে আবদুল্লাহ ইবনে উবাই চলে যাওয়ার পরে উমর (রা) বলেন, “হে আল্লাহর রসুল, এই লোককে শেষ করে দেওয়ার অনুমতি দিন।” মুসলিমরা সকলেই জানতেন যে সে একজন মুনাফেক। কিন্তু নবিজি (সা) বললেন, “তাকে ছেড়ে দাও (অর্থাৎ, তাকে হত্যা করো না)। কারণ, আমি চাই না লোকেরা বলুক মুহাম্মদ নিজের সাহাবিদের হত্যা করে।”
তারপর নবিজি (সা) সব সাহাবিকে তৎক্ষণাৎ মদিনায় ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেন। তাঁরা টানা ২০ ঘণ্টা হেঁটে পরদিন সকালে মদিনায় পৌঁছেন। ফলে তাঁরা এতই ক্লান্ত হয়ে পড়েন যে বাড়ি ফিরে বালিশে মাথা রাখার সঙ্গে সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়েন। নবিজির (সা) উদ্দেশ্য ছিল অভিযানে যা ঘটেছে তা থেকে সাহাবিদের মনকে সরিয়ে নিয়ে আসা।
আরও পড়ুনঃ