বনু সাকিফ গোত্র থেকে কুরাইশদের দূত: উরওয়া ইবনে মাসউদ | হুদায়বিয়ার সন্ধি-২, এর পরের ঘটনা ছিল কুরাইশ ও মুসলিমদের মধ্যে কয়েক দফায় সরাসরি দূত চালাচালি। কুরাইশ পক্ষ থেকে প্রথম যে ব্যক্তি দূত হয়ে যায় সে ছিল সাকিফের অন্যতম নেতা উরওয়া ইবনে মাসউদ আল-সাকাফি। সাকিফ গোত্রটি তায়েফ শহরে বাস করত । আমরা আগে উল্লেখ করেছি, কুরাইশ ও সাকিফের মধ্যে যেমন কিছুটা রেষারেষি ছিল, তেমনি এক ধরনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কও ছিল।
বনু সাকিফ গোত্র থেকে কুরাইশদের দূত: উরওয়া ইবনে মাসউদ | হুদায়বিয়ার সন্ধি-২ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

উরওয়া কুরাইশদের আনুষ্ঠানিক দূত হওয়ার অভিপ্রায় জানিয়ে বলল, “আমি কি তোমাদের গোত্রের অংশ নই? তোমরা কি জান না যে আমি সাকিফ থেকে এলেও কুরাইশদের প্রতি আমার আনুগত্য আছে?” উরওয়ার মা ছিল কুরাইশ, সে অর্থে কুরাইশদের সঙ্গে তার রক্তের সম্পর্ক ছিল ।
সে আরও কিছু প্রশ্ন ছুড়ে দিল: “তোমরা কি আমাকে সুবিচারক বলে মনে কর না? আমি কি এ রকম ক্ষেত্রে তোমাদের সাহায্য করিনি? আমি কি অতীতে রক্তপাত এড়াতে ভূমিকা রাখিনি? আমি কি আগে বিবদমান পক্ষদের মিলিয়ে দিইনি?” উরওয়া এসব বলে বোঝাতে চাচ্ছিল যে, সে কুরাইশদের স্বার্থ রক্ষায় সর্বোত্তম ভূমিকা রাখতে পারবে। তার প্রশ্নের সবাই হ্যাঁ-সূচক উত্তর দিলে সে বলল, “বুদায়েল তো আমাদের কাছে কিছু বার্তা নিয়ে এসেছে। এখন আমাকে তাঁর (মুহাম্মদ) কাছে যেতে দাও।

দেখি আমি তাঁর সাথে কী আপসরফা করতে পারি।” এভাবেই উরওয়া ইবনে মাসউদ কুরাইশদের দিক থেকে প্রথম দূত হিসেবে মনোনীত হলো । তারপর উরওয়া নবিজির (সা) কাছে গেলে তিনি তাকে ঠিক তাই বললেন যা তিনি বুদায়েলকে বলেছিলেন, “অবশ্যই যুদ্ধ কুরাইশদের ক্ষতি করেছে… আমি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাব যতক্ষণ না তিনি আমাকে বিজয় দান করেন…… যদি তারা ইচ্ছা করে, আমি তাদের কিছু সময় দিতে পারি যাতে তারা…।”
উরওয়া নবিজির (সা) কথা শুনেও না শোনার ভান করে প্রসঙ্গ পাল্টিয়ে বলল, “আসলে তুমি কী বলতে চাও? একদিকে তুমি বলছ যে তুমি আল্লাহকে ডাকছ, অন্যদিকে তুমি আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করে এমন সব লোকদের সঙ্গে এসেছ যাদের আমরা চিনি না। তুমি রক্ত ঝরাতে চাও, হারামের পবিত্রতা নষ্ট করতে চাও।” নবিজি (সা) উরওয়ার কথার যুতসই জবাব দিলেন, “আমি কেবল আত্মীয়তার বন্ধন স্থাপন করতে এসেছি (ছিন্ন করতে নয়), আমার লোকদের ধর্মকে পরিশুদ্ধ করতে এসেছি, তাদের জীবনকে আরও উন্নত করতে এসেছি।”
আরও পড়ুনঃ