ওহুদের যুদ্ধে মুবারাজা | ওহুদের যুদ্ধ-২, এর মধ্যে কুরাইশরা প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে দেয়। পুরুষদের উদ্বুদ্ধ করতে তাদের নারীরা মাঠে নেমে পড়ে। তারা পুরুষদের বলে, “তোমরা যদি যুদ্ধে হেরে গিয়ে ফিরে আস তবে তোমরা আমাদের কাছ থেকে কিছুই পাবে না (অর্থাৎ তোমরা আমাদের বিছানায় পাবে না)।” তারা উদ্বুদ্ধকরণ ও প্রচারণার অংশ হিসেবে গানবাজনাও করে।

ওহুদের যুদ্ধে মুবারাজা | ওহুদের যুদ্ধ-২ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন
অন্যান্য যুদ্ধের মতো ওহুদের যুদ্ধও মুবারাজা দিয়ে শুরু হয়। প্রথম মুবারাজা সংঘটিত হয় তালহা ইবনে আবি তালহা এবং আলি ইবনে আবি তালিবের (রা) মধ্যে । কুরাইশদের পক্ষ থেকে তালহা বেরিয়ে এসে বলল, “কে আছ আমার সাথে লড়াই করবে?” আলি ইবনে আবি তালিব উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, “আমি লড়াই করব!” তালহা পুরো শরীরে বর্ম পরে ছিল; এমনকি তার হাত ও শরীরের অন্যান্য অংশও ঢাকা ছিল । অন্যদিকে আলির এসব কিছুই ছিল না।

তারা সম্মুখযুদ্ধ করার মতো দূরত্বে পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গে তালহা তার তলোয়ার চারদিকে ঘোরানো শুরু করল। কিন্তু আলি ছিলেন তার চেয়ে অনেক ক্ষিপ্ত। তালহা কিছু করার আগেই আলি তলোয়ার উন্মুক্ত করে তাকে আঘাত করেন। তালহার পুরো শরীর উরুর ওপর পর্যন্ত বর্ম দিয়ে মোড়া ছিল, তাই আলি তার উরুর নিচে আঘাত করেন; তালহার পা তার শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, সে ভারসাম্য হারিয়ে মাটিতে পড়ে যায়। আলি শেষ আঘাতের জন্য এগিয়ে গেলে তালহা মিনতি করে বলে, “আমি তোমাকে আত্মীয়তার অধিকার নিয়ে অনুরোধ করছি, আমাকে মেরে ফেলো না।”
তারা দুজন ছিলেন দূর সম্পর্কের কাজিন। তাদের কথোপকথন কেউ শুনতে না পেলেও আলি (রা) বিব্রত বোধ করেন এবং তলোয়ার নামিয়ে ফিরে চলে আসেন। শিবিরে ফেরার পর সাহাবিরা তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, “হে আলি, তুমি কেন তাকে হত্যা করলে না?” উত্তরে আলি (রা) বলেন, “আত্মীয়তার দোহাই দিয়ে সে তাকে হত্যা না করার জন্য আমাকে অনুরোধ করলে আমি আসলেই বিব্রত বোধ করছিলাম।” অর্থাৎ আলির (রা) মর্যাদাবোধ ও বীরত্ব এ ক্ষেত্রে তালহাকে প্রাণে বাঁচিয়ে দিয়েছিল। পা কাটা যাওয়ার কারণে তালহা আর যুদ্ধে অংশ নিতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত সে মারা যায়।
আরও পড়ুনঃ