কোরান মুখস্থকারী শহিদের সম্মান | ওহুদের যুদ্ধ-৫ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

কোরান মুখস্থকারী শহিদের সম্মান | ওহুদের যুদ্ধ-৫, মক্কার কুরাইশরা বদরের যুদ্ধের পরপরই ওহুদের যুদ্ধের পরিকল্পনা করা শুরু করে। ওহুদের যুদ্ধ ছিল পরিপূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে যুদ্ধ, ঠিক বদরের মতো নয়। এই যুদ্ধের পরিকল্পনার পেছনে কুরাইশদের দিক থেকে কয়েকটি কারণ আমরা ধারণা করতে পারি:

 

কোরান মুখস্থকারী শহিদের সম্মান | ওহুদের যুদ্ধ-৫ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

১. ধর্মীয় কারণ: কুরাইশদের দিক থেকে নবি করিম (সা) ও ইসলামের প্রতি যে বিদ্বেষ ও বৈরিতা সৃষ্টি হয়েছিল তা আরও বেড়ে গিয়েছিল।

২. সামাজিক কারণ: বদরের যুদ্ধে কুরাইশরা তাদের প্রথম সারির প্রায় সব নেতাসহ অনেক আত্মীয়স্বজনকে হারিয়েছে। যেমন, ইকরিমার পিতা আবু জেহেল, সাফওয়ানের পিতা উমাইয়া প্রমুখ। সে জন্য তাদের মনে প্রতিশোধস্পৃহা জাগ্রত হয়। সর্বোপরি বদরের পুরো ব্যাপারটিই ছিল তাদের জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর।

৩. অর্থনৈতিক কারণ: ভৌগোলিকভাবে দেখতে গেলে, মক্কা থেকে সিরিয়ায় বাণিজ্যিক কাফেলা যাওয়ার পথের মধ্যখানে ছিল মদিনার অবস্থান, যা মুসলিমদের দখলে চলে গিয়েছিল। মুসলিমরা সিরিয়া যাওয়ার সব পথ আটকে রেখে কুরাইশদের ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়ায়। অর্থাৎ মক্কাবাসী কুরাইশরা সিরিয়ার সঙ্গে ঠিকমতো আর বাণিজ্য করতে পারছিল না। তারা বিকল্প পথ সন্ধানের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। ফলে তাদের অর্থনীতি আক্ষরিক অর্থে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছিল।

 

islamiagoln.com google news
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

মক্কার অর্থনীতি ছিল সিরিয়া ও ইয়েমেনের মধ্যে বাণিজ্যিক সংযোগপথ বা পাইপলাইনের (বা করিডরের) ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল। এই ব্যবসা পরিচালনার দায়িত্বে ছিল কুরাইশরা, তারা এ থেকে প্রচুর অর্থ উপার্জন করত। এই পাইপলাইনের একপাশের অংশ (অর্থাৎ সিরিয়ার দিক) কাটা পড়লে অন্য পাশের অংশও (ইয়েমেনের দিক) কাজ করবে না। তাই কুরাইশরা তাদের অর্থনীতি বাঁচানোর জন্য ভীষণ মরিয়া হয়ে উঠেছিল।

৪. রাজনৈতিক কারণ: ইসলামি প্রজাতন্ত্রের আকার ক্রমশ বাড়ছিল । একের পর এক উপজাতি ইসলামের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করছিল। ফলে কুরাইশদের কাছে নবিজি (সা) রাজনৈতিক হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন।

কোরান মুখস্থকারী শহিদের সম্মান | ওহুদের যুদ্ধ-৫ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

কোরান মুখস্থকারী শহিদের সম্মান | ওহুদের যুদ্ধ-৫ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

এবার মৃতদেহগুলো কবরস্থ করার পালা। সাহাবিদের কবর খোঁড়ার নির্দেশ দেওয়া হলো। কিন্তু এতগুলো মৃতদেহের প্রত্যেকের জন্য পৃথক পৃথক কবরের ব্যবস্থা করা তখন সম্ভব ছিল না। তাই একটি কবরে দুই, তিন বা চারজনকে পর্যন্ত দাফন করা হয়। নবিজি (সা) বললেন, “যারা সবচেয়ে বেশি কোরান জানে তাদের আগে দাফন করো।” এ ছিল কোরান শেখার জন্য সম্মান। তিনি অন্যত্র বলেছেন, “নিশ্চয় এই কিতাবের মাধ্যমেই আল্লাহ মানুষকে সম্মানিত করবেন এবং এর মাধ্যমেই তিনি অন্যদেরকে হেয় করবেন।”

আরও পড়ুনঃ

Leave a Comment