রোমান এবং পার্সিয়ানদের ধর্মীয় অবস্থা | ইসলাম-পূর্ব বিশ্বে ধর্মীয় পরিস্থিতি, রোমানরা ছিল খ্রিষ্টধর্মের অনুসারী। অন্যদিকে পার্সিয়ান বা সাসানীয়রা ছিল। জোরোস্ট্রিয়ান ধর্মের অনুসারী। ইসার (আ) পর খ্রিষ্টধর্ম মূলত তিনটি ধারায় বিভক্ত হয়ে পড়ে।
Table of Contents
রোমান এবং পার্সিয়ানদের ধর্মীয় অবস্থা | ইসলাম-পূর্ব বিশ্বে ধর্মীয় পরিস্থিতি | মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ জীবন
১) জ্ঞানতত্ত্ব:
এটি একটি রহস্যময় ধারণা।
২) ইহুদি খ্রিষ্টান:
তারা নিজেদের ইহুদি হিসেবে মনে করত, এবং বিশ্বাস করত যে তাদের মুসার (আ) মাধ্যমে অর্পিত ধর্মীয় বিধিবিধান পালন করতে হবে। তারা কোশার’ খাবার খেত এবং সুন্নতে খৎনা করত। তারা বিশ্বাস করত যে যিশুকে ইহুদিদের কাছে প্রেরণ করা হয়েছিল; এবং তিনিই ছিলেন প্রতিক্রত মসিহ, যেমনটি আমরা মুসলিমরা বিশ্বাস করি।
৩) পলিন খ্রিষ্টান:
এই ধর্মতত্ত্বের প্রবক্তা ছিলেন পল নামক এক ব্যক্তি, যিনি এমনকি যিশুখ্রিষ্টের শিষ্যদেরও কেউ ছিলেন না, তবে তিনি যিশুকে দেখেছেন বলে দাবি করেছিলেন। পলই এই ধারণার প্রবর্তন করেছিলেন যে, যিশুখ্রিস্টের মধ্যে ঈশ্বরের উপাদান রয়েছে। তাঁর মতে, যিশু যে কোনো সাধারণ মানুষ নন, তিনি ‘শরিয়া’ বা ধর্মীয় অনুশাসন প্রবর্তন করতে পৃথিবীতে এসেছেন। যিশুকে বিশ্বাস করলে অন্য কোনো শরিয়া অনুসরণ করার প্রয়োজন নেই । পলই প্রথম ট্রিনিটির ধারণা প্রবর্তন করেছিলেন।
পরবর্তী ৩০০ বছর ধরে খ্রিষ্টানরা আসলে খ্রিষ্টধর্মের স্বরূপ কী হওয়া উচিত, তা নিয়ে বিতর্ক করেছে। যিশু কে? তারা এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে চেয়েছে। তিনি কি ঈশ্বর? ঈশ্বরের পুত্রা নাকি কোনো খ্রিষ্টধর্মের আগে রোমানরা পৌত্তলিক ছিল। তারা ছিল খ্রিষ্টানদের চরম শত্রু। কথিত আছে, রোমান পৌত্তলিকরা খ্রিষ্টানদেরকে খুঁজে খুঁজে বের করে সিংহের গর্তে ফেলে দিত। সম্রাট নিরোর সময়ে খ্রিষ্টানদেরকে এমনকি জীবিত পুড়িয়ে মারাও হতো। এভাবে ২০০-৩০০ বছর ধরে খ্রিষ্টানরা চরমভাবে নির্যাতিত হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত এক অলৌকিক ব্যাপার ঘটে রোমের সম্রাট (কনস্ট্যান্টাইন) নিজেই খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষা গ্রহণ করেন।
খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করার পর কনস্ট্যান্টাইন ধর্ম বিষয়ে একটি পরিষদ গঠন করেছিলেন। যেহেতু সম্রাট আগে থেকেই একজন পৌত্তলিক ছিলেন, তাই তিনি খ্রিষ্টধর্মের মধ্যে পৌত্তলিকতার বেশ কিছু উপাদান ঢুকিয়ে দেন। সেখান থেকেই ২৫ ডিসেম্বর, ট্রিনিটি, ঈশ্বরের পুত্র ইত্যাদির প্রচলন শুরু হয়। ৩২৫ খ্রিষ্টাব্দে কনস্ট্যান্টাইন ট্রিনিটিভিত্তিক ‘পলিন’ খ্রিষ্টধর্মকেই একমাত্র খ্রিষ্টধর্ম হিসেবে পালন করার জন্য এক রাষ্ট্রীয় আদেশ জারি করেন।
আর ইহুদি খ্রিষ্টানদেরকে নির্যাতন ও হত্যা করা হয়। সেই থেকেই পলিন খ্রিষ্টধর্মই খ্রিষ্টানদের মূলধারা হিসেবে পরিচিতি পায়। আজকে যে খ্রিষ্টানদের বিভিন্ন ভাগ (যেমন অর্থোডক্স, ক্যাথলিক, প্রোটেস্ট্যান্ট ইত্যাদি) আমরা দেখতে পাই, তার পুরোটাই (প্রায় ৯৯.৯%) পলিন খ্রিষ্টানদের উত্তরসূরি। মহানবি মুহাম্মদের (সা) জন্মের সময় (৫৭০ খ্রিষ্টাব্দ) পর্যন্ত হাতেগোনা কিছু সংখ্যক ইহুদি খ্রিষ্টান অবশিষ্ট ছিল (যেমন, সালমান আল-ফারিসির শিক্ষক)।
আরো পড়ুনঃ