ইসরা ও মিরাজ। নবিদের সঙ্গে কথোপকথন | রাতের ভ্রমণ এবং ঊর্ধ্বলোকে আরোহণ-2 | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

ইসরা ও মিরাজ। নবিদের সঙ্গে কথোপকথন | রাতের ভ্রমণ এবং ঊর্ধ্বলোকে আরোহণ-2, আগের পর্বে যেমনটি উল্লেখ করেছি, ইসরা ও মিরাজের ঘটনা বর্ণনা করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, নানা ছোট ছোট ঘটনার কালানুক্রম অনুসারে সাজানো। তবে নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে, নবি করিম (সা) অন্য নবি-রসুলদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। কিন্তু কোথায় তা ঘটেছে? আকাশের বিভিন্ন স্তরে হতে পারে, আবার বায়তুল মাকদিসেও হতে পারে।

 

ইসরা ও মিরাজ। নবিদের সঙ্গে কথোপকথন | রাতের ভ্রমণ এবং ঊর্ধ্বলোকে আরোহণ-2 | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

ইসরা ও মিরাজ। নবিদের সঙ্গে কথোপকথন | রাতের ভ্রমণ এবং ঊর্ধ্বলোকে আরোহণ-2 | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

নবিজির (সা) বরাত দিয়ে আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) বলেছেন, “ইসরা ও ‘মিরাজের রাতে তিনি ইব্রাহিম (আ), মুসা (আ) এবং ইসার (আ) সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তাঁরা নিজেদের মধ্যে শেষ বিচারের দিন সম্পর্কে কথা বলতে শুরু করেন। প্রথমে ইব্রাহিমকে (আ) জিজ্ঞেস করা হলো, কেয়ামতের দিন সম্পর্কে বলুন।’ তিনি বললেন, ‘ওই দিনটি সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা নেই।’ তখন তাঁরা মুসাকে (আ) একই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলে তিনিও অনুরূপ জবাব দিলেন।

অতঃপর ইসাকে (আ) জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন: ‘আমাকে জানানো হয়েছে যে, আমার পৃথিবীতে ফিরে আসাটা হবে কেয়ামতের একটি নিদর্শন। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন জানেন সেটা কবে হবে। তবে সেই সময় দাজ্জাল আসবে এবং আমি তাকে হত্যা করব। মানুষ তখন বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়বে। প্রতিটি উপত্যকা থেকে ইয়াজুজ ও মাজুজ বেরিয়ে আসবে। তারা (ইয়াজুজ ও মাজুজ) সেসব এলাকা অতিক্রম করবে সেখানকার সব পানি পান করে নিঃশেষ করে ফেলবে, যতক্ষণ না আমি আল্লাহর কাছে তাদেরকে মেরে ফেলার জন্য দোয়া করব।

 

islamiagoln.com google news
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

সুতরাং আল্লাহ তাদের মেরে ফেলবেন, এবং তাদের পচে যাওয়া দেহের দুর্গন্ধ পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে। তখন আমি এই দুর্বিষহ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে আবারও দোয়া করব। ফলে আল্লাহ আকাশ থেকে বৃষ্টি প্রেরণ করবেন এবং বৃষ্টির পানিতে দেহগুলো ভেসে গিয়ে সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। বিচারের দিনটি হবে একটি গর্ভবর্তী মহিলার মতো, যে তার সন্তান প্রসব করতে চলেছে।”

 

ইসরা ও মিরাজ। নবিদের সঙ্গে কথোপকথন | রাতের ভ্রমণ এবং ঊর্ধ্বলোকে আরোহণ-2 | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

তিন নবির মধ্যে সংঘটিত এই কথোপকথনটি হাদিসের বইগুলোতে লিপিবন্ধ করা আছে। তবে তাঁরা অন্য কোনো বিষয়ে কথা বলেছিলেন কি না তা আল্লাহই ভালো জানেন। ইসা (আ) যা বলেছিলেন তা পবিত্র কোরানেও উল্লেখ আছে। “যতক্ষণ না (কেয়ামতের নিদর্শন হিসেবে) ইয়াজুজ ও মাজুজকে ছেড়ে দেওয়া হবে এবং তারা প্রতিটি উচ্চভূমি থেকে দ্রুত ছুটে আসবে।” [সুরা আম্বিয়া, ২১:৯৬) ইয়াজুজ ও মাজুজ, ইসার (আ) ফিরে আসা, বিচারের দিন ইত্যাদি সম্পর্কে অনেক হাদিস রয়েছে। ইসরা ও ‘মিরাজের এই ঘটনা থেকে ধরে নেওয়া যায়, ওই হাদিসগুলোর উৎস সরাসরি ইসা (আ)।

ইসরা ও’ মিরাজের আরেকটি কথোপকথন হাদিসের বইগুলোতে লিপিবদ্ধ আছে, যেখানে নবিজি (সা) বলেছেন, “আমি ইসরার রাতে ইব্রাহিমের (আ) সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলাম। তিনি আমাকে বলেছেন, ‘হে মুহাম্মদ (সা)! তোমার উম্মতকে আমার সালাম দাও।” এখানে ইব্রাহিম (আ) তাঁর নিজের উত্তরপুরুষের মাধ্যমে আমাদের তাঁর সালাম জানাচ্ছেন।

আরও পড়ূনঃ

Leave a Comment