বনু কুরায়জার আত্মসমর্পণ এবং আমর ইবনে-সাদা’র কাহিনি | বনু কুরায়জা উপজাতি, অবরোধের ২৪ দিন কেটে গেছে, ২৫তম দিন শুরু হবে। বনু কুরায়জা সামনে কোনো আশার আলো দেখতে পাচ্ছে না। তাদের খাবার ও অন্যান্য জিনিসের মজুতও কমে এসেছে। উপায়ান্তর না দেখে অবশেষে ২৫তম দিনে তারা আত্মসমর্পণ করার সিদ্ধান্ত নিল তার আগে ২৪তম রাতে ছোটখাটো একটি ঘটনা ঘটে। মুসলিম বাহিনী বনু কুরায়জার দুর্গের চারপাশ ঘিরে রেখেছে। মুসলিমরা দুর্গের ভেতর থেকে এক লোকের বাইরে আসার শব্দ শুনতে পেলেন। তাদের একজন ডেকে বললেন, “কে ওখানে?” লোকটি জবাব দিল, “আমি আমর ইবনে-সাদা।”
বনু কুরায়জার আত্মসমর্পণ এবং আমর ইবনে সাদা’র কাহিনি | বনু কুরায়জা উপজাতি | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

সম্ভবত আমরই ছিলেন বনু কুরায়জার একমাত্র (অথবা দুইজনের মধ্যে একজন) ব্যক্তি যিনি কাব ইবনে আসাদের পরিকল্পনার সরাসরি বিরোধিতা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “আমি কখনই মুহাম্মদকে দেওয়া প্রতিশ্রুতির বরখেলাপ করব না।” ইহুদিরা যা করেছিল তাতে তিনি মোটেই খুশি ছিলেন না । তবে তিনি দুর্গের ভেতরেই ছিলেন, কারণ তিনি সেখানেই বাস করতেন।

তিনি শুনলেন, তাঁর লোকেরা পরের দিন আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছে, তখন একবার দুর্গ থেকে বেরোবার চেষ্টা করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিলেন। তিনি যেদিক দিয়ে বেরোলেন, সেদিকে প্রহরার দায়িত্বে ছিলেন মুহাম্মদ ইবনে মাসলামা। তাঁর নিশ্চিত ধারণা হলো, আমর বনু কুরায়জার কৃতকর্ম সমর্থন করেন না। আর দুর্গ থেকে বেরিয়ে আসার পর তো তিনি আর বনু কুরায়জার কেউ নন। তাই মুহাম্মদ ইবনে মাসলামা মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলেন, তিনি তাঁকে নির্বিঘ্নে চলে যেতে দেবেন। তিনি আল্লাহকে বললেন, “হে আল্লাহ, আমি যে তার চলে যাওয়ার ব্যাপারটি উপেক্ষা করছি, আপনি তা উপেক্ষা করুন।”
জানা যায়, আমর দুর্গ থেকে বেরিয়েই মদিনার পথে যাত্রা শুরু করেন, সেখানে রাত কাটান, এবং পরের দিন সকালে নিরুদ্দেশ হয়ে যান। তার শেষ পরিণতি কী ছিল তা একমাত্র আল্লাহই জানেন। তবে নবিজি (সা) এই ঘটনা জানার পর বলেছিলেন, “তিনি এমন একজন মানুষ ছিলেন যাঁকে আল্লাহ তাঁর সততার কারণে রক্ষা করেছেন।” নবিজি (সা) মুহাম্মদ ইবনে মাসলামার উপর নাখোশ হননি। আমর তাঁর ধর্মের পথে ছিলেন এবং প্রতিশ্রুতি রক্ষায় যত্নবান ছিলেন। তাই আল্লাহ তাঁকে রক্ষা করেছেন।
আরও পড়ুনঃ