উসমান ইবনে আফফানের (রা) মক্কায় প্রবেশ | হুদায়বিয়ার-সন্ধি (চুক্তি)-৩, নবি করিমের (সা) মনোনীত দূত হিসেবে উসমান ইবনে আফফান (রা) মক্কার পথে রওনা দিলেন। শহরে প্রবেশের পথে বালদা নামক স্থানে দেখলেন, একদল লোক রাস্তা আটকিয়ে বসে আছে। তারা তাঁকে বাধা দিয়ে বলল, “তোমার মক্কায়-প্রবেশের কোনো আশা নেই। আমরা তোমার সঙ্গে আপস-আলোচনা করব না । আসলে তোমাদের সঙ্গে আলোচনার কোনো অবকাশই নেই।”
উসমান ইবনে আফফানের (রা) মক্কায় প্রবেশ | হুদায়বিয়ার সন্ধি (চুক্তি)-৩ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

সেই দলে ছিল উসমানের (রা) আপন চাচাতো ভাই আবান ইবনে সাইদ ইবনে আল-আস ইবনে উমাইয়া। উসমান (রা) বাধা পেয়ে ফিরে যেতে উদ্যত হলেন। আবান যখন দেখল যে লোকেরা তার আপন চাচাতো ভাইয়ের সঙ্গে অমন আচরণ করছে, তখন তার মনে জাহেলি গোষ্ঠীবাদ জেগে উঠল। সে তার ঘোড়া থেকে নেমে উসমানের (রা) কাছে গিয়ে বলল, “তুমি আমার সাথে চলো । মক্কায় আমি তোমাকে সুরক্ষা দেব।”

তারপর সে তাঁকে মক্কায় নিয়ে গিয়ে কুরাইশ নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করল। উসমান (রা) আবু সুফিয়ান ও মক্কার অন্যান্য কুরাইশ নেতাদের সাথে দেখা করলেন। উল্লেখ্য, তাঁরা দুজনেই বনু উমাইয়া গোত্রের, সরাসরি আত্মীয়। আবু সুফিয়ান ও উসমানের পিতা আফফান আপন চাচাতো ভাই। সে হিসেবে আবু সুফিয়ান আর উসমান চাচা-ভাতিজা। [প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, তাদের এই আত্মীয়তার কারণেই অনেক বছর পরে উসমান নিহত হলে আবু সুফিয়ানের পুত্র মুয়াবিয়া নতুন খলিফা আলি ইবনে আবি তালিবকে জোর দিয়ে বলেছিলেন, “আপনাকে অবশ্যই উসমানের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে হবে।”]
উসমানের সঙ্গে আলোচনায় কোনো কুরাইশ নেতাই সে বছর মুসলিমদের মক্কায় আসতে দিতে রাজি হলো না। তাদের প্রত্যেকেরই একই কথা, “আরবদের এ কথা বলার সুযোগ দেওয়া যাবে না যে আমরা বাধ্য হয়ে তাদের মক্কায়-প্রবেশ করতে দিয়েছি।”
নবিজি (সা) উসমানকে (রা) আগেই বলে দিয়েছিলেন যে, তিনি মক্কায়-প্রবেশ করতে সক্ষম হলে যেন সেখানে অবস্থানকারী সব মুসলিম ধর্মান্তরিতদের সঙ্গে দেখা করেন এবং তাঁদের এই আশ্বাস দেন যে, আল্লাহ তাঁদের পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত আছেন, তিনি শিগগিরই তাঁদের জন্য একটি উপায় বের করবেন। সে অনুসারে উসমান (রা) মক্কার সব মুসলিমের সঙ্গে দেখা করলেন। লক্ষ করুন, মক্কায় তখনও একদল মুসলিম আটকা পড়ে ছিলেন, নিশ্চয়ই তাঁরা সেখানে অত্যাচার-নিপীড়ন সহ্য করেই অবস্থান করছিলেন।
আরও পড়ুনঃ