মদিনার সংবিধান | চুক্তি ও মদিনার সংবিধান | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

মদিনার সংবিধান | চুক্তি ও মদিনার সংবিধান, মদিনাপর্বের প্রথম যুগের এর পরের বড় ঘটনাটি হলো সংবিধান প্রণয়ন। এক্ষেত্রে আমাদের একটি সমস্যা হলো, সংবিধান বিষয়ে সিরাহের ক্লাসিক্যাল উৎসগুলোতে তেমন উল্লেখ নেই। যেসব সিরাহলেখক কিছুটা বর্ণনা করেছেন, তাঁরা আবার বর্ণনাকারীদের পরম্পরা (ইসনাদ) উল্লেখ করেননি। মদিনার সংবিধান বিষয়ে ইবনে ইসহাকই সবচেয়ে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু এভাবে উল্লেখ করেছেন, “আমার কাছে বর্ণিত হয়েছে যে….।” এখানে সমস্যা হলো, তাঁর এবং নবিজির (সা) মধ্যে দেড়শ বছরের ব্যবধান। সুতরাং বলা যেতে পারে, আমাদের কাছে সংবিধানের বিষয়ে সরাসরি ইসনাদ নেই।

 

মদিনার সংবিধান | চুক্তি ও মদিনার সংবিধান | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

মদিনার সংবিধান | চুক্তি ও মদিনার সংবিধান | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

মুসনাদ ইমাম আহমদসহ কিছু হাদিসের বইয়ে সংবিধানের বিষয়ে বর্ণনা রয়েছে। ইমাম আহমদ বলেছেন, “নবিজি (সা) মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে সম্পাদনের জন্য একটি চুক্তিপত্র রচনা করেছিলেন। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে। “তাঁদের প্রত্যেকে নিজ নিজ ধারদেনা ও সমস্যার ব্যাপারে নিজেরাই ব্যবস্থা নেবেন, এবং তাঁদের মধ্যে ‘ইসলাহ’ ও ‘মারুফ” থাকবে।” প্রাথমিক যুগের কোনো সিরাহগ্রন্থে ইসনাদসহ পুরো সংবিধানের উল্লেখ না থাকায় সমস্যাটি রয়েই গেছে।

এর ফলে কিছু মানুষের মনে এই সন্দেহ তৈরি হয়েছে যে, সেই সময় আদৌ সেখানে কোনো সংবিধান ছিল কি না। তাদের বক্তব্য হলো, সংবিধান থাকার তো কোনো নিশ্চিত প্রমাণ আমাদের কাছে নেই। তবে অনেক আধুনিক গবেষকের মতে, ‘বর্ণনাকারীদের কোনো ইসনাদ বা পরম্পরা না থাকা সত্ত্বেও আপনি দেখতে পাবেন, সংবিধানটিতে খুবই প্রাচীন আমলের ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, এমন একটি ভাষা যা ইবনে ইসহাকের সময়েও প্রচলিত ছিল না। যদি সংবিধানটি বানোয়াট হয়েও থাকে, তাহলেও সেখানে এত কঠিন ভাষা ব্যবহার করার কথা নয়। সুতরাং আধুনিক যুগের অধিকাংশ পণ্ডিত-গবেষক মদিনার সংবিধানের সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন। সংবিধানটি মোট পাঁচ পৃষ্ঠার। তাই আমরা এর প্রতিটি বাক্য নিয়ে আলোচনা করব না। আমরা এর চারটি প্রধান বিষয়ের নিরিখে আলোচনা করব:

 

islamiagoln.com google news
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

১) মুসলিমদের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়:

২) ইহুদিদের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়।

৩) পৌত্তলিকদের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষ

৪) সাধারণভাবে সবার সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়।

ইমাম আল-ধাহাবিসহ আরো কিছু পণ্ডিত সংবিধানের গভীরে না গিয়ে খুব সংক্ষেপে বর্ণনা করেছেন। ইবনে সাদ ও আল-ওয়াকিনি তেমন উল্লেখ করেননি। আর অন্যরা বিচ্ছিন্নভাবে উল্লেখ করেছেন। দেখে মনে হয় যেন তাঁরা এই সংবিধানের গুরুত্ব পুরোপুরি মূল্যায়ন করেননি। তবে আমরা যারা মুসলিম সংখ্যালঘু দেশে বাস করি, তাদের কাছে সংবিধানটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং আশাব্যগুক।

 

মদিনার সংবিধান | চুক্তি ও মদিনার সংবিধান | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

আগেই উল্লেখ করেছি, সংবিধানটি প্রাচীন ভাষায় রচিত, অনেক ক্ষেত্রেই বাক্যগুলো দুর্বোধ্য। সেখানে অনেক গোত্রের নাম ছিল যাঁদের সম্পর্কে পরবর্তীকালে তেমন কিছু জানা যায় না। আমরা জানি, আনসারদের মধ্যে আউস এবং খাজরাজ নামের দুই উপজাতি ছিল। কিন্তু তাদের মধ্যে কমপক্ষে ৪০-৫০টি গোত্র ছিল যাদের বেশিরভাগের নাম জানা নেই। কিন্তু এই সংবিধানটিতে প্রত্যেকটি গোত্রের নামসহ তাদের কী প্রয়োজন তার উল্লেখ রয়েছে। এ থেকেও সংবিধানটির সত্যতার প্রমাণ পাওয়া যায়। সংবিধানটির কাঠামো ছিল আমাদের আজকের সময়ের তুলনায় সম্পূর্ণ আলাদা। বাক্যগুলো ছিল বেশ অগোছালো; বিষয়ভিত্তিক ভাগ ছিল না। ফলে এটি বিশ্লেষণ করা খুব কঠিন। আমরা বিষয়গুলো যতটা সম্ভব সহজভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করব:

আরও পড়ূনঃ

Leave a Comment