নবিজি (সা) ও মুমিনদের প্রতি ঠাট্টা-বিদ্রুপ | কুরাইশদের বিরোধিতা-১ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

নবিজি (সা) ও মুমিনদের প্রতি ঠাট্টা-বিদ্রুপ | কুরাইশদের বিরোধিতা-১, চতুর্থ যে কৌশলটি কুরাইশরা ব্যবহার করত তা ছিল নবি করিম (সা) এবং মুমিনদের প্রতি ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা। এ সংক্রান্ত অনেক ঘটনা আছে। একবার নবিজির (সা) কাছে কয়েক সপ্তাহ বা মাসের জন্য নতুন ওহি আসছিল না। এ নিয়ে আবু জেহেলের স্ত্রী নবিজিকে (সা) বলল, “তোমার শয়তান (জিব্রাইলকে বোঝাতে চেয়েছে) তোমাকে ত্যাগ করেছে।

 

নবিজি (সা) ও মুমিনদের প্রতি ঠাট্টা-বিদ্রুপ | কুরাইশদের বিরোধিতা-১ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

নবিজি (সা) ও মুমিনদের প্রতি ঠাট্টা-বিদ্রুপ | কুরাইশদের বিরোধিতা-১ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

আমি তো তোমার কাছ থেকে নতুন কোনও বাণী পাচ্ছি না।” একথা শুনে নবিজি (সা) অনেক কষ্ট পান। ঠিক সেই সময় আল্লাহ তায়ালা তাঁর রসুলের (সা) কাছে সুরা আদ-দোহা নাজিল করেন: “তোমার প্রতিপালক তোমাকে পরিত্যাগ করেননি এবং তোমার ওপর তিনি অসন্তুষ্টও হননি। তোমার জন্য অনাগত সময় তো পূর্ববর্তী সময় অপেক্ষা শ্রেয়। অচিরেই তোমার প্রতিপালক তোমাকে অনুগ্রহ দান করবেন, আর তুমিও সন্তুষ্ট হবে।” [৯৩: ৩-৫]

নবিজির (সা) প্রতি ঘৃণা ও বিদ্বেষ প্রকাশের ক্ষেত্রে আবু জেহেল সবার চেয়ে এগিয়ে ছিল এবং সব সীমা অতিক্রম করে গিয়েছিল। কোনো উচ্চমর্যাদার ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ করতে গেলে সে তাঁকে নিয়ে মজা করে বলত, “আপনি কীভাবে আপনার পিতৃপুরুষের ধর্ম ত্যাগ করতে পারলেন? আপনি কি নিজেকে আপনার বাবা এবং দাদার চেয়েও ভালো বলে মনে করেন?” আর ব্যক্তিটি যদি নীচু বংশের কেউ হতো, তাহলে সে তাকে বাধা দিত এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করত।

 

islamiagoln.com google news
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

একবার আবু জেহেল এক ব্যক্তির কাছ থেকে কিছু খরিদ করে, কিন্তু বিক্রেতাকে অর্থ শোধ করতে গড়িমসি করতে থাকে। একদিন বিক্রেতা তার পাওনা আদায়ের জন্য তাগিদ দিলে আবু জেহেল তাকে বলল, “মুহাম্মদের (সা) কাছে যাও এবং সে তোমার জন্য তা আদায় করে দেবে।” আবু জেহেল কথাটি রসিকতা বললেও লোকটি তা বুঝতে না পেরে নবিজির কাছে গিয়ে বলল, “আমি আবু জেহেলের কাছে কিছু টাকা পাই।

 

নবিজি (সা) ও মুমিনদের প্রতি ঠাট্টা-বিদ্রুপ | কুরাইশদের বিরোধিতা-১ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

সে আমাকে টাকাগুলো আপনার কাছ থেকে নিয়ে নিতে বলেছে।” লোকটি ভেবেছিল, আবু জেহেল হয়তো নবিজির (সা) কাছে টাকা পায়; সেই পাওনা টাকাগুলো আবু জেহেলের কাছে ফিরিয়ে না দিয়ে নবিজি (সা) যেন সরাসরি তাকে দিয়ে দেয়। এ কথা শুনে নবিজি (সা) বললেন, “চিন্তা করো না। আমি তোমার টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করছি।” তারপর তিনি লোকটিকে নিয়ে আবু জেহেলের বাড়িতে গেলেন এবং দরজায় কড়া নাড়লেন। দরজা খোলা হলে তিনি বললেন, “হে আবু জেহেল, এই লোকটিকে তার টাকা এখনই ফিরিয়ে দাও।” সঙ্গে সঙ্গে আবু জেহেলের মুখ একদম ফ্যাকাসে হয়ে গেল এবং সে কাঁপতে শুরু করল। সে দ্রুত টাকা এনে এক রকম না শুনেই ওই লোকের মুখের ওপর ছুড়ে দিল।

পরে আবু জেহেল এই ঘটনাটি ব্যাখ্যা করে বলেছিল যে, সে মুহাম্মদের (সা) পেছনে যা দেখেছিল তা অন্য কেউ দেখতে পায়নি। সে দেখতে পাচ্ছিল যে এক পাল রাগান্বিত উট যেন তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্যত হয়েছে, তা দেখে সে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল। এটা নিশ্চয়ই আল্লাহর পক্ষ থেকে একটা অলৌকিক ঘটনা।

আরো পড়ূনঃ

Leave a Comment