মুরাইসির অভিযানটি কখন সংঘটিত হয়েছিল? | আল-মুরাইসি ও বনু আল-মুস্তালিকের অভিযান, গাজওয়াত আল-মুরাইসি গুরুত্বপূর্ণ ছিল অভিযান থেকে ফেরার পথে উম্বুল মুমিনিন আয়েশার (রা) ওপর অপবাদ আরোপ করার কারণে। তবে অভিযানটির সময় নিয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে বিস্তর মতভেদ আছে।
মুরাইসির অভিযানটি কখন সংঘটিত হয়েছিল? | আল-মুরাইসি ও বনু আল-মুস্তালিকের অভিযান | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

ইবনে সাদ, আল-জুহরি, ইবনে হাজার ও ইবনে কাসির- এঁদের সকলের মতে, হাসানের জন্মের বছর অর্থাৎ পঞ্চম হিজরিতে অভিযানটি সংঘটিত হয়েছিল। ইবনে ইসহাক ও আল- তাবারির মতে, তা ষষ্ঠ হিজরির শাবান মাসের ঘটনা। আবার কেউ কেউ বলেন, চতুর্থ হিজরির ঘটনা।
ইবনে ইসহাকের বর্ণনা অনুসারে ষষ্ঠ হিজরি মানার ক্ষেত্রে একটি সমস্যা রয়েছে: আয়েশার (রা) অপবাদের ঘটনায় সাদ ইবনে মুআদ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রেখেছিলেন, এবং আমরা জানি যে সাদ খন্দকের যুদ্ধের পর পরই পঞ্চম হিজরিতে মারা যান। সুতরাং সম্ভবত মুরাইসির অভিযান পঞ্চম হিজরির ঘটনা ।
চতুর্থ হিজরির পক্ষে যেসব পণ্ডিত মত দিয়েছেন, তাঁরা সম্ভবত হিজরত সংঘটিত হওয়ার এক বছর পরের বছরকে প্রথম বছর হিসেবে গণনা করেছিলেন; অর্থাৎ আমাদের প্রথম হিজরি তাদের কাছে ০ (শূন্য)তম হিজরি, তাঁদের প্রথম হিজরি আমাদের কাছে দ্বিতীয় হিজরি। সুতরাং তাঁদের চতুর্থ হিজরি আসলে পঞ্চম হিজরি। আর ষষ্ঠ বছরে সংঘটিত হলে সাদ ইবনে মুআদ মুরাইসির অভিযানে অংশ নিতে পারতেন না। সুতরাং সবচেয়ে যুক্তিগ্রাহ্য মতটি হচ্ছে পঞ্চম হিজরি, বা হিজরতের পঞ্চম বছর। তবে বেশিরভাগ সিরাহের গ্রন্থে ইবনে ইসহাককে অনুসরণ করার কারণে ষষ্ঠ বছরের উল্লেখ রয়েছে।

মুরাইসির অভিযানের ফলাফল
সম্ভবত পঞ্চম হিজরির ২ শাবান রোজ সোমবার নবিজি (সা) বনু আল-মুস্তালিকের ওপর আক্রমণ করেন। সময়টা ছিল ফজরের ঠিক পরে। সেই সময় নারীরা পানি সংগ্রহ করতে বেরিয়েছেন, শিশুরা বেরিয়েছে খেলার জন্য। বনু আল-মুস্তালিকের লোকেরা এতই অপ্রস্তুত ছিল যে, মুসলিম বাহিনীকে দেখার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে আত্মসমর্পণ করে ।
অভিযান শেষে বনু আল-মুস্তালিক গোত্রের এক হাজারেরও বেশি লোককে বন্দি করা হয়; সাথে পাওয়া যায় ২ হাজারেরও বেশি উট এবং ৫ হাজার ভেড়া। যুদ্ধবন্দিদের বেশিরভাগই ছিল নারী ও শিশু। বনু আল-মুস্তালিকের লোকদের মধ্যে হাতে গোনা কয়েকজন মারা যায়। অন্যদিকে মুসলিমদের একটি মাত্র দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু ছাড়া কেউ হতাহত হননি।
এক আনসারি মুসলিম হিশাম ইবনে সুবাবা নামের একজন মুহাজিরকে শত্রুপক্ষের ভেবে ভুল করে হত্যা করে ফেলে। হিশাম ইবনে সুবাবার এক ভাই মিকিয়াস ইবনে সুবাবা তখন মক্কায় বসবাস করত। মিকিয়াস যখন শোনে যে তার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে, তখন সে ইসলাম গ্রহণের ভান করে মদিনায় গিয়ে রক্তমূল্য হিসেবে ১০০টি উট দাবি করে। নবিজি (সা) তাকে তার দাবি অনুযায়ী রক্তমূল্য পরিশোধ করেন। কিন্তু ওই রাতেই মিকিয়াস সেই আনসারিকে (যে তার ভাইকে হত্যা করেছিল) হত্যা করে উট নিয়ে মক্কার দিকে চলে যায় ।
আরও পড়ুনঃ