সাফিয়া ভাই হামজার (রা) মৃত্যুর বিষয়টি জানতে পারলেন | ওহুদের যুদ্ধ-৫, নবি করিম (সা) যুদ্ধের ময়দানে সাফিয়াকে দূর থেকে দেখতে পেয়ে প্রথমে চিনতে পারেননি। তিনি সাহাবিদের বললেন, “ওই নারী! ওই নারী!” অর্থাৎ নারীটি যে-ই হোক, তার এখানে থাকা ঠিক হবে না, কারণ এখানকার দৃশ্য দেখে সে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে। সেই নারীকে চিনতে পারলেন তাঁর পুত্র জুবায়ের ইবনুল আওয়াম (রা)।
সাফিয়া ভাই হামজার (রা) মৃত্যুর বিষয়টি জানতে পারলেন | ওহুদের যুদ্ধ-৫ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

জুবায়ের দৌড়ে গিয়ে মাকে ডাকলেন। ছেলে কী বলতে পারেন তা সাফিয়া অনুমান করতে পেরেছিলেন। তাই কিছু বলার আগেই তিনি জুবায়েরের বুকে মৃদু ধাক্কা দিয়ে বললেন, “তোমাকে এখন আমার আর দরকার নেই।” জুবায়ের বললেন, “কিন্তু নবিজি (সা) বলেছেন, আপনার সেখানে যাওয়া ঠিক হবে না।” এ কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে সাফিয়া থেমে গেলেন; তারপর নিজের সঙ্গে আনা দুটি পোশাক জুবায়েরকে দিয়ে বললেন, “এগুলো আমি আমার ভাই হামজার জন্য কিনেছিলাম। তার কাফন ও কবরের জন্য এগুলো ব্যবহার করো।”

সাফিয়া ও হামজা আপন ভাই-বোন, তাঁরা পরস্পরের খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন। হামজাকে হত্যা করে তাঁর দেহ বিকৃত করার খবর শুনে সাফিয়া আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন; তবু তিনি নবিজির (সা) কথা মেনে নেন। জুবায়ের কাপড় নিয়ে হামজার দেহের কাছে গেলে দেখতে পান, ঠিক পাশেই একজন আনসারের মৃতদেহ, সেটিতেও কোনো আবরণ নেই। সেই সময় সাহাবিরা বেশ দরিদ্র ছিলেন, তাঁদের অনেকেরই ন্যূনতম প্রয়োজনীয় পোশাকও ছিল না ।
ওই অবস্থা প্রসঙ্গে জুবায়ের পরে বলেন, “আমি এই ভেবে বিব্রত বোধ করছিলাম যে, হামজা দুটি কাপড় পাবে আর তার পাশেই থাকা আনসারি কিছুই পাবে না। তাই কাকে কোন কাপড় দেওয়া যায় তা বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজন অনুসারে দেহদুটি ঢেকে দিয়েছিলাম।” এখানে একটি ফিকহ বিষয় আছে। একজনের জন্য নির্ধারিত জিনিস পরিস্থিতির কারণে আরেকজনের জন্য ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল। প্রতিটি মৃতদেহ ঢাকার জন্য কমপক্ষে একটি কাফনের কাপড় নিশ্চিত করা ওয়াজিব ।
আরও পড়ুনঃ