হুদায়বিয়ার সন্ধির শর্তাবলি | হুদায়বিয়ার সন্ধি ( চুক্তি )-৫ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

হুদায়বিয়ার সন্ধির শর্তাবলি | হুদায়বিয়ার সন্ধি ( চুক্তি )-৫, আরও বেশ কয়েকটি শর্তও চুক্তির অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সব শর্ত একত্র করলে এমন দাঁড়ায়:

হুদায়বিয়ার সন্ধির শর্তাবলি | হুদায়বিয়ার সন্ধি ( চুক্তি )-৫ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

সূরা হুদায়বিয়ার সন্ধির শর্তাবলি | হুদায়বিয়ার সন্ধি ( চুক্তি )-৫ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

১. এ বছর ওমরা হবে না, তবে পরের বছর হবে।

২. পরের বছর যখন ওমরার সময় আসবে, কুরাইশরা তখন তিন দিনের জন্য মক্কা শহর খালি করে বাইরে চলে যাবে এবং মুসলিমরা নির্বিঘ্নে ওমরা সম্পন্ন করতে পারবে।

৩. কুরাইশদের মধ্য থেকে একজন লোকও মদিনায় মুসলিমদের কাছে যেতে পারবে না, এমনকি সে ইসলাম ধর্মের অনুসারী হলেও। এমন হলে (যদি কেউ যায়) তাকে মক্কায় কুরাইশদের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে।

৪. কিন্তু যদি কোনো মুসলিম ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে তার পূর্বপুরুষদের ধর্মে (পৌত্তলিকতায়) ফিরে আসতে চায় এবং মদিনা থেকে মক্কায় চলে আসে, তবে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে না ।

 

islamiagoln.com google news
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

৫. আগামী ১০ বছরের জন্য শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি বজায় থাকবে। এই ১০ বছর কোনো পক্ষই অপর পক্ষের বিরুদ্ধে লড়াই করবে না। উভয় পক্ষের জন্যই মূলমন্ত্র হবে, ‘কোনো বর্ম কিংবা তলোয়ার নেই।

৬. উভয় পক্ষই অন্য কোনো উপজাতি কিংবা গোত্রের সঙ্গে জোট বাঁধতে পারবে। যদি কোনো গোত্র মুসলিমদের সঙ্গে জোটে যোগ দেয় তাহলে ওই গোত্রের জন্য মুসলিমদের পালনীয় সকল শর্ত প্রযোজ্য হবে। আবার যদি কোনো গোত্র কুরাইশদের সঙ্গে জোটে যোগ দেয় তাহলে ওই গোত্রের জন্য কুরাইশদের পালনীয় সকল শর্ত প্রযোজ্য হবে।

প্রথম চারটি শর্ত ছিল মুসলিমদের জন্য খুবই কঠোর । উভয় পক্ষ থেকেই চুক্তির সাক্ষী ছিল। মুসলিমদের পক্ষে সাক্ষী ছিলেন আবু বকর, উমর, উসমান এবং আলি, অর্থাৎ, পরবর্তী চার খলিফার সবাই। কুরাইশদের পক্ষে ছিল মিকরাজ এবং আরও একজন অথবা দুজন।

 

হুদায়বিয়ার সন্ধির শর্তাবলি | হুদায়বিয়ার সন্ধি ( চুক্তি )-৫ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

রাজনৈতিক সত্তা হিসেবে ইসলাম

এ পর্যন্ত মুসলিমদের প্রাপ্তি হতাশাজনক বলে মনে হলেও এখানে একটি ইতিবাচক দিক রয়েছে। তা হলো, এই প্রথমবারের মতো মুসলিমদের একটি স্বাধীন ও শক্তিশালী রাজনৈতিক সত্তা হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে, অসম হলেও কুরাইশদের একটি চুক্তিতে আসতে বাধ্য করা হচ্ছে। এটা ঠিক যে, চুক্তির শর্ত দেখে আমাদের মনে ক্ষোভের সঞ্চার হয়, সাহাবিদের ক্ষেত্রে তা আরও অনেক বেশি হওয়ার কথা। কিন্তু এই প্রথমবারের মতো মুসলিম ও কুরাইশরা একই টেবিলে বসে দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে আলোচনা করছে।

এখানে ইসলাম ও পৌত্তলিকতার মধ্যে প্রকৃত বিভাজনের সূচনাও দেখা যাচ্ছে । ৬ নং ধারাটি এক সময় সমগ্র আরব উপদ্বীপকে ইসলাম ও কুফর এই দুটি ভাগে বিভক্ত করবে এবং মক্কাবিজয়ের ক্ষেত্র প্রস্তুত করবে। স্মরণ করুন, ইসলামের শুরুতে এটি ছিল শুধু বনু হাশিম বনাম কুরাইশ। তারপর ধীরে ধীরে আরবের সব জাতিই সম্পৃক্ত হয়ে দুটি শিবিরে ভাগ হয়ে পড়ছে: একদিকে ইসলাম, অন্যদিকে পৌত্তলিকতা, গোত্রবাদ, জাহেলিয়া ইত্যাদি। হুদায়বিয়ার সন্ধির মাধ্যমেই এই মেরুকরণের সূত্রপাত ।

আরও পড়ুনঃ

Leave a Comment