সম্পদ বা ফারে | বনু নাদিরকে বহিষ্কার, বনু নাদিরের লোকেরা অনেক জিনিসপত্র নিয়ে মদিনা ছেড়ে চলে যায়, কিন্তু তাদের জমি, খেজুরগাছ তো নিয়ে যাওয়ার উপায় ছিল না। তবে এসব স্থাবর সম্পত্তি ছাড়াও তাদের কিছু জিনিসপত্র রেখে যেতে হয়, উটের পিঠে যেগুলো বহন করা সম্ভব ছিল না। তাদের রেখে যাওয়া সেসব জিনিসপত্র নিয়ে কী করা যায় তা নিয়ে কিছু সাহাবির মধ্যে আলোচনা হয়।

এ বিষয়ে আল্লাহ তায়ালা কোরানের আয়াত [সুরা হাশর, ৫৯:৬-৭] নাজিল করেন; সেখানে এই সম্পদকে ‘গনিমত’ না বলে ‘ফায়ে’ বলে সংজ্ঞায়িত করেছেন। আরবি শব্দ ‘ফায়ে’ দ্বারা সেই সম্পদ বোঝানো হয়েছে, যা যুদ্ধ বা রক্তপাত ছাড়াই করায়ত্ত করা হয়। শরিয়তে ফায়ের বিধান গনিমতের থেকে ভিন্ন।
সম্পদ বা ফারে | বনু নাদিরকে বহিষ্কার | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

গনিমা ও ফায়ের বিধানগুলো কেবল ইসলামের প্রাথমিক যুগের সেনাবাহিনীর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। কারণ, সেগুলো এসেছিল সেইসব বাহিনীর জন্য যাদের সদস্যরা ছিলেন সম্পূর্ণভাবে স্বেচ্ছাসেবী (‘ভলান্টিয়ার’)। তাঁরা যুদ্ধের ময়দানে নিজেদের ঘোড়া, অস্ত্র ইত্যাদি ব্যবহার করতেন; লড়াই করার বিনিময়ে তাঁদের বেতন দেওয়া হতো না। কিন্তু আমাদের সময়ে এই নিয়মগুলো প্রযোজ্য হবে না, কারণ এখন সেনাবাহিনীর সদস্যদেরকে বেতন দেওয়া হয়, অস্ত্র ও অন্যান্য যুদ্ধসরঞ্জামও তাঁদের নিজেদের নয় ।
এখানে আরও উল্লেখ্য, ফায়ে কয়েকটি ভাগ ভাগ করা হতো: একটি অংশ দেওয়া হতো রাষ্ট্রকে; একটি অংশ নবিজিকে (সা); তবে এই অংশটি নবি-পরিবারের কাছে যেত কি না তা নিয়ে মতভিন্নতা রয়েছে; এবং – বাকি অংশ আমির বা খলিফাকে, তাঁরা তা ইচ্ছামতো ভাগ করার অধিকার রাখতেন ।
নবিজি (সা) বনু নাদিরের ফেলে যাওয়া বিপুল পরিমাণ জমি মুহাজিরদের মধ্যে ভাগ করে দিয়েছিলেন; তখন পর্যন্ত তাঁদের কোনো জমি ছিল না; আনসাররা মুহাজিরদের সাহায্য করে আসছিলেন। মুহাজিররা জমি পাওয়ার পর তাঁদের আর্থিক উন্নতি ঘটে এবং তাঁরা অনেকটাই আনসারদের সমপর্যায়ে আসেন। সার্বিকভাবে উভয় শ্রেণিরই আর্থিক উন্নতি ঘটে। ইবনে ইসহাক করেছেন, যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী আনসারদের মধ্যে তিনজনের কোনো জমি ছিল না। মুহাজিদের সঙ্গে তাঁরাও ফায়ের অংশ পেয়েছিলেন।
আরও পড়ুনঃ