সাওদা বিনতে জামআ (রা) | মহানবি মুহাম্মদের (সা) বিয়ে | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

সাওদা বিনতে জামআ (রা) | মহানবি মুহাম্মদের (সা) বিয়ে, খাদিজার (রা) ইন্তেকালের পরে নবি করিম (সা) বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন, বেশ কয়েক মাস ধরে তাঁর মুখে কোনো হাসি ছিল না। একপর্যায়ে খাওলা বিনতে হাকিম (১) তাকে আবার বিয়ে করার পরামর্শ দেন। খাওলা বলেন, “আপনি যদি একজন বয়স্ক মহিলাকে চান তবে সাওদা, আর যদি অল্পবয়সী কোনো মহিলাকে চান তবে আয়েশা। ”

নবিজি (সা) ওই দুজনকেই এক মাসের ব্যবধানে বিয়ে করেন। কিন্তু আয়েশার ক্ষেত্রে বিবাহোত্তর শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে আরও সাড়ে তিন বছর সময় নেন। সেই সময় শুধুমাত্র নিকাহ সম্পন্ন হয়েছিল।

সাওদা বিনতে জামআ (রা) | মহানবি মুহাম্মদের (সা) বিয়ে | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

সাওদা বিনতে জামআ (রা) | মহানবি মুহাম্মদের (সা) বিয়ে | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

সাওদা বিনতে জামআ (রা)

খাদিজার (রা) মৃত্যুর আনুমানিক ছয় মাস পর নবিজির (সা) জীবনে স্ত্রী হিসেবে আসেন সাওদা বিনতে জামআ ইবনে কায়েস ইবনে আবদ আল-শামস (রা)। তাঁর পূর্বের স্বামী ছিলেন সুহাইল ইবনে আমরের ভাই আল-সুকরান ইবনে আমর । আল-সুকরান আবিসিনিয়ায় হিজরত করেছিলেন। সম্ভবত তিনি আবিসিনিয়ায় থাকা অবস্থায় মারা যান অথবা সেখান থেকে ফিরে আসার ঠিক পরপরই খুব কম বয়সেই মারা যান। আমাদের জানা মতে, আল-সুকরান ছিলেন মক্কার সময়ে মৃত্যুবরণকারী অল্প কজন সাহাবিদের একজন।

সাওদা ইসলাম গ্রহণ করার পর তাঁর পরিবার তাঁকে ত্যাজ্য করে। তাই স্বামীর মৃত্যুর পরে তাঁকে দেখভাল করার মতো কেউ ছিল না। সাওদার এই অবস্থায় নবিজি (সা) তাঁর প্রতি সহানুভূতি অনুভব করেন। সম্ভবত দাওয়াতের ১০ম বছরের শাওয়াল মাসে তাঁদের বিয়ে হয়।

সাওদার সঠিক বয়স আমাদের জানা নেই, তবে তাঁর বর্ণনা থেকেই আমরা জানি যে, তিনি ছিলেন নবিজির (সা) স্ত্রীদের মধ্যে সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ ও  স্থূলকায়। তিনি ধীরে ধীরে হাঁটতেন। সাওদা নিজেই বলেছেন, “বিদায় হজের সময় ভিড় এড়ানোর জন্য আমি নবিজির (সা) কাছে মুজদালিফা থেকে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়ার অনুমতি চেয়েছিলাম, কারণ আমি গড়নে ছিলাম স্কুল এবং হাঁটতাম খুব ধীর গতিতে।”

 

islamiagoln.com google news
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

ইবনে আব্বাসকে তাঁর সঙ্গে পাঠানো হয়েছিল। এই ঘটনা থেকে আমরা ফিকহ বিধান পাই: যাদের খুব জরুরি প্রয়োজন (যেমন বৃদ্ধ, দুর্বল ইত্যাদি) তারা মুজদালিফা থেকে তাড়াতাড়ি মক্কায় ফিরে যেতে পারে । ৬ষ্ঠ-৭ম হিজরি সালের দিকে সাওদার (রা) মনে এই ভাবনার উদয় হয় যে, নবিজি (সা) তাঁকে তালাক দিতে পারেন। তাই তিনি স্বেচ্ছায় নবিজির (সা) সঙ্গে একটি আপস-মীমাংসার প্রস্তাব করেন। তিনি বলেন, “হে আল্লাহর রসুল, আপনার অন্য স্ত্রীদের প্রতি আমার কোনো হিংসা নেই।

আমি আপনার সঙ্গে থাকতে চাই যাতে কেয়ামতের দিন আমি আপনার স্ত্রীদের একজন হিসেবে পুনরুত্থিত হতে পারি। তাই আমার (জন্য বরাদ্দকৃত) রাতগুলো আপনি আয়েশাকে দিয়ে দিন।” অর্থাৎ তিনি তার রাতগুলো স্বেচ্ছায় আয়েশাকে দান করেছিলেন এই ভেবে যে নবিজি (সা) তা ভালো মনে গ্রহণ করবেন। বলা হয়, এই প্রসঙ্গেই আল্লাহ সুরা নিসায় এই আয়াতটি নাজিল করেন:

 

সাওদা বিনতে জামআ (রা) | মহানবি মুহাম্মদের (সা) বিয়ে | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

“কোনো স্ত্রী যদি তার স্বামীর কাছ থেকে দুর্ব্যবহার ও উপেক্ষিত হওয়ার আশঙ্কা করে তবে তারা (পারস্পরিক ভালোর জন্য) আপস-নিষ্পত্তি করতে চাইলে তাতে কোনো দোষ নেই।” [4:128] আমরা জানি, আয়েশা (রা) ছিলেন নবিজির (সা) প্রিয়তম স্ত্রী। নবিজি (সা) তাঁর সঙ্গে আরও বেশি সময় কাটাতে চাইতেন। তবে তিনি তাঁর সব স্ত্রীর প্রতি ন্যায্যতা বজায় রাখার স্বার্থে তা করতেন না। সাওদা (রা) উমর ইবনুল খাত্তাবের (রা) খেলাফতের সময় মৃত্যুবরণ করেন। তাঁকে বাকি আল-ঘরকাদে দাফন করা হয়। তিনি ছিলেন খাদিজার (রা) পরে নবিজির (সা) দ্বিতীয় স্ত্রী।

আরও পড়ুনঃ

Leave a Comment