সান ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা) | দ্বিতীয়বারের-ওহি, এঁদের মধ্যে সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাসের (রা) বয়স ছিল সবচেয়ে কম, ১৬ বছরের কাছাকাছি। তিনি ছিলেন কুরাইশের মধ্যে এক বিশাল সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান। তিনি ইসলাম গ্রহণ করে প্রতিমাপূজা ছেড়ে দিলে তাঁর মা তাঁকে হুমকি এমনকি নির্যাতন করার চেষ্টাও করেছিলেন। তাঁর মা তাঁকে ব্ল্যাকমেল করার চেষ্টা করে আবেগময় কন্ঠে বলেছিলেন, “যতক্ষণ পর্যন্ত তুই প্রতিমাপূজা না করছিস, ততক্ষণ পর্যন্ত আমি কিছু খাব না। আর তুই তোর ধর্মবিশ্বাস (ইসলাম) থেকে ফিরে না এলে আমি তোর সামনে যন্ত্রণাদায়কভাবে মৃত্যুবরণ করব।”

সান ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা) | দ্বিতীয়বারের-ওহি | মহানবী হযরত-মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন
সাদ প্রথমে মাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু তাঁর মা না খেয়ে একসময় খুব দুর্বল হয়ে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। অনেক চেষ্টা করে মাকে বোঝাতে না পেরে একপর্যায়ে সাদ খুব আবেগপ্রবণ হয়ে বলেন, “ও আমার মা! আপনার বিবেচনা অনুসারে যা ইচ্ছা তা করতে পারেন, কিন্তু আমি আমার ধর্ম ছেড়ে যাব না। এমনকি আমার মধ্যে যদি ১০০টি রুহ থাকে এবং আমার সবগুলো রুহ যদি আপনাকে মৃত্যুবরণ করতে দেখে, তবুও আমি মূর্তিপূজা করব না।” পুত্রের সংকল্পের এই দৃঢ়তা দেখে মা উপবাস ভেঙে আবার খাওয়া শুরু করেছিলেন। এই ঘটনাকে উপলক্ষ করে আল্লাহ একটি আয়াত নাজিল করেন।

“তারা (তোমার পিতামাতা) যদি তোমাকে পীড়াপীড়ি করে আমার সাথে শরিক করতে (সমকক্ষ দাঁড় করাতে) যে বিষয়ে তোমার কোনো জ্ঞান নেই, তুমি তাঁদের কথা মানা কোরো না; তবে পৃথিবীতে তাঁদের সঙ্গে সম্ভাবে বসবাস করবে।” [সুরা লুকমান, ৩১:১৫] সান ইবনে আবি ওয়াক্কাসই একমাত্র ব্যক্তি যাঁকে নবিজিকে (সা) বলেছিলেন, আমার পিতা ও মাতাকে তোমার নিকট মুক্তিপণ হিসেবে দান করছি। এটি আরবি ভাষায় একটি বিশেষ অভিব্যক্তি, যার অর্থ ‘আমি তোমার জন্য আমার সর্বস্ব ত্যাগ করব। নবিজি (সা) সাদ ছাড়া আর কাউকে কখনো এই ধরনের কথা বলেননি। এটা ছিল সাদের জন্য এক বিরাট সম্মানের ব্যাপার।
উমর (রা) যখন মৃত্যুশয্যায় ‘ওরা’ নির্বাচন করছিলেন, তখন তিনি সাল ইবনে আবি ওয়াক্কাসকেই প্রথম বেছে নিয়েছিলেন। উমর মন্তব্য করেছিলেন, আমি মানুষদের মধ্য থেকে তাকেই বেছে নেব যার ব্যাপারে নবি করিম (সা) মৃত্যুর সময় নিশ্চিতভাবেই সন্তুষ্ট ছিলেন।”
আরো পড়ূনঃ