আহতদের সাহায্যে মুসলিম নারীরা | ওহুদের যুদ্ধ-৪ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

আহতদের সাহায্যে মুসলিম নারীরা | ওহুদের যুদ্ধ-৪, ওহুদের যুদ্ধে আনসার নারীরা আহতদের শুশ্রূষা করার কাজে অংশ নেন। তাঁরা যুদ্ধক্ষেত্রে পরিচর্যায় করা ছাড়াও অসুস্থদের পানি পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। জানা যায়, আয়েশা (রা) এবং উম্মে সুলায়েম যুদ্ধের ময়দানে পানির পাত্র, খাবার ইত্যাদি দিয়ে মুসলিম বাহিনীকে সাহায্য করেন।

আহতদের সাহায্যে মুসলিম নারীরা | ওহুদের যুদ্ধ-৪ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

আহতদের সাহায্যে মুসলিম নারীরা | ওহুদের যুদ্ধ-৪ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

সাধারণভাবে মুসলিম নারীরা সামরিক অভিযানগুলোতে অংশ নিতেন না। তবে ওহুদের যুদ্ধ ছিল ব্যতিক্রম; কারণ:

(১) তাঁদের বাড়ি থেকে ওহুদের দূরত্ব ছিল খুব কম; এবং

(২) এটি ছিল সময়ের দাবি। “তাকে জবাব দাও: আল্লাহ সবচেয়ে ক্ষমতাশালী এবং সম্মানীয়”

খালিদের বাহিনী যখন নবি করিমকে (সা) খুঁজে পেল না, তখন কেউ একজন আবু সুফিয়ানকে ওহুদে ডেকে নিয়ে এল। আবু সুফিয়ান পাহাড়ের উপরে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলল, “মুহাম্মদ কি বেঁচে আছে? জবাব দাও।”

নবিজি (সা) উমর (রা) ও আবু বকরকে (রা) বললেন, “তার কথার কোনো উত্তর দিও না।”

 

islamiagoln.com google news
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

আবু সুফিয়ান আরও দুবার চিৎকার করে একই কথা জিজ্ঞেস করল, কিন্তু কোনো উত্তর পেল না। তারপর সে জিজ্ঞেস করল, “আবু কাহাফারের পুত্র (অর্থাৎ আবু বকর) কি জীবিত আছে?” নবিজি (সা) সবাইকে বললেন, “জবাব দিও না।” আবু সুফিয়ান এবার জিজ্ঞেস করল, “আল-খাত্তাবের পুত্র (অর্থাৎ উমর) কি বেঁচে আছে?” নবিজি (সা) এবারও বললেন, “জবাব দিও না।” আবু সুফিয়ান কোনো সাড়া না পেয়ে বলল, “আমরা ওদের সবাইকে মেরে ফেলেছি!”

উমর (রা) নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে বলে উঠলেন, “তুমি মিথ্যা বলছ, হে আল্লাহর শত্রু! নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁদের সবাইকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। তাঁরা অন্য কোনো একদিন তোমাদের ক্ষতি করতে আসবে!” আবু সুফিয়ান এই যুদ্ধে কুরাইশদের বিজয়ের নিশ্চয়তা পেয়ে বলল, “আজ বদরের যুদ্ধের প্রতিশোধ নেবার দিন। যুদ্ধের পালাবদল হয়েছে (অর্থাৎ, এটা আমাদের বিজয় এবং বদরের পরাজয়ের প্রতিশোধ)। তোমরা দেখতে পাবে, যুদ্ধে নিহত অনেকেরই অঙ্গচ্ছেদ করা হয়েছে। আমি এ কাজ করার জন্য (আমার দলের লোকদের) আদেশ দেইনি, কিন্তু আমি এতে অসন্তুষ্টও নই।” উমর (রা) বললেন, “তোমাদের আর আমাদের মৃতরা এক নয়। আমাদের মৃতরা যাবে জান্নাতে, আর তোমাদের মৃতরা যাবে জাহান্নামে।”

আবু সুফিয়ান চিৎকার করে বলল, “উলু হুবাল (হুবাল সম্মানিত হোক)!” উল্লেখ্য, হুবাল হলো কাবার সামনে রাখা মূল প্রতিমা। নবিজি (সা) সাহাবিদের বললেন, “তাকে জবাব দাও।” সাহাবিরা বললেন, “আমরা কীভাবে এই কথার জবাব দেব?” নবিজি (সা) বললেন, “তাকে বলো, আল্লাহ সবচেয়ে বেশি ক্ষমতাবান এবং তার সম্মান আরও বেশি।” এবার আবু সুফিয়ান উত্তর দিল, “আমাদের উজ্জা আছে। তোমাদের উজ্জা নেই।” উল্লেখ্য, উজ্জা হলো কাবার সামনে রাখা আরেকটি বড় প্রতিমা। নবিজি (সা) সাহাবিদের বললেন, “তাকে জবাব দাও।” সাহাবিরা বললেন, “কীভাবে?” নবিজি (সা) বললেন, “তাকে বলো, ‘আল্লাহ আমাদের রক্ষা করবেন। কিন্তু তোমার কোনো সাহায্যকারী নেই।”

 

আহতদের সাহায্যে মুসলিম নারীরা | ওহুদের যুদ্ধ-৪ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন

 

ইবনে কাইয়িম বলেছেন, আবু সুফিয়ান যখন জানতে চেয়েছিল, অমুক অমুক কি বেঁচে আছে? তখন নবিজি (সা) সাহাবিদের উত্তর দিতে নিষেধ করেন। কিন্তু সে যখন প্রতিমার প্রশংসা করে আল্লাহকে উপহাস করে, তখন নবিজি (সা) সাহাবিদের তার জবাব দিতে বলেন। এ থেকে বোঝা যায়, নবিজি (সা) শিরক ও কুফরির বিষয়ে কোনো ছাড় দিতে রাজি ছিলেন না। তারপর আবু সুফিয়ান কসম খেয়ে ঘোষণা দেয়, এই দিন (ওহুদের যুদ্ধের দিন) থেকে এক বছর পরে (অর্থাৎ ৪র্থ হিজরিতে) তারা আরও একবার বদরের ভূমিতে মুসলিমদের মুখোমুখি হবে।

আরও পড়ুনঃ

Leave a Comment