সুরা লাহাবের উচ্চারণ সহ বাংলা অনুবাদ – সূরা আল লাহাব মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের ১১১ তম সূরা। এর আয়াত সংখ্যা ৫ এবং সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। আবু লাহাবের আসল নাম ছিল আবদুল ওয্যা। সে ছিল আবদুল মোত্তালিবের অন্যতম সন্তান। গৌরবর্ণের কারণে তার ডাক নাম হয়ে যায় আবু লাহাব।
কোরআন পাক তার আসল নাম বর্জন করেছে। কারণ সেটা মুশরিকসুলভ। এছাড়া “আবু লাহাব” ডাক নামের মধ্যে জাহান্নামের সাথে বেশ মিলও রয়েছে। সে রসূলুল্লাহ্ – এর কট্টর শত্রু ও ইসলামের ঘোর বিরোধী ছিল এবং রসূলুল্লাহ্ -কে কষ্ট দেয়ার প্রয়াস পেত। তিনি যখন মানুষকে ঈমানের দাওয়াত দিতেন, তখন সে সাথে সাথে যেয়ে তাকে মিথ্যাবাদী বলে প্রচার করত।
সুরা লাহাবের উচ্চারণ সহ বাংলা অনুবাদ
সূরা আল লাহাব ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের ১১১ নম্বর সূরা। এর আয়াত সংখ্যা ৫ এবং সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। হিজরতের আগে মক্কায় মহানবী (সা) যখন প্রকাশ্যে ইসলাম প্রচার করছিলেন সেই কার্যক্রমের প্রথম দিকে নাজিল হয়েছিল এই সুরা। এ সুরায় রয়েছে ৫টি বাক্য বা আয়াত।
ইসলাম ও মহানবীর (সা) অন্যতম প্রধান বা কঠোর শত্রু আবু লাহাবের প্রতি প্রকাশ্যে তথা তার নাম উল্লেখ করে কঠোর নিন্দা করা হয়েছে সুরা লাহাবে। আবু লাহাব ও তার স্ত্রীর অত্যন্ত মন্দ পরিণতির ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে এ সুরায়। এই ভবিষ্যদ্বাণী অক্ষরে অক্ষরে বাস্তব হয়েছিল। কুরআনের অন্য কোনো সুরায় ইসলামের কোনো শত্রুর প্রতি এমন প্রকাশ্য নিন্দা দেখা যায় না। মহানবীর প্রতি শত্রুতায় আবু লাহাব ও তার স্ত্রী উম্মে জামিলা বিনতে হারবের ভূমিকা ছিল এতই তীব্র যে তারা এক্ষেত্রে যে কোনো ধরনের বাধা, হয়রানি ও অশোভনীয় ভাষা ব্যবহারে দ্বিধা বোধ করত না, যদিও সম্পর্কের দিক থেকে আবু লাহাব ছিল মহানবীর আপন চাচা।

সুরা লাহাবের পটভূমি সম্পর্কে বলা হয়, যখন নিকটাত্মীয়দের কাছে ইসলামের দাওয়াত দেয়ার নির্দেশ সংক্রান্ত আয়াত নাজিল হয় (‘ওয়ানযির আশীরাতাকাল আকরাবীন) তখন মহানবী (সা.) নিজ নিকটাত্মীয়দের দাওয়াত দিয়ে তাদের কাছে ইসলামের আহ্বান তুলে ধরেন। এ সময় আবু লাহাব ক্রুদ্ধ হয়ে তলোয়ার হাতে নিয়ে অভিশাপ দিতে বলতে লাগল যে, ‘তোমার হাত ভেঙ্গে যাক! তোমার সর্বনাশ হোক! তুমি এজন্য আমাদের ডেকেছ?’ এরই উত্তরে সুরা লাহাব নাজিল হয়।
আরবি:
بِسۡمِ اللّٰہِ الرَّحۡمٰنِ الرَّحِیۡمِ
١ تَبَّتْ يَدَا أَبِي لَهَبٍ وَتَبَّ
٢ مَا أَغْنَى عَنْهُ مَالُهُ وَمَا كَسَبَ
٣ سَيَصْلَى نَارًا ذَاتَ لَهَبٍ
٤ وَامْرَأَتُهُ حَمَّالَةَ الْحَطَبِ
٥ فِي جِيدِهَا حَبْلٌ مِنْ مَسَدٍ
উচ্চারণ:
‘বিসমিল্লাহ-হির রহমা-নির রাহীম’
ত্বাব্বাত ইয়াদা- আবী লাহাবিউ ওয়া তাব্বা. মা আগনা- ‘আনহু মা-লুহু ওয়ামা- কাসাব. ছাইয়াছলা-না-রানযা-তা লাহাবিউ ওয়ামরাআতুহ, হাম্মা- লাতাল হাত্বোয়াব. ফীজী দিহা- হাবলুম মিম মাসাদ।
সুরা লাহাবের অনুবাদ: অসীম দয়াময় ও অনন্ত করুণাময় আল্লাহ’র নামে,
(১) আবু লাহাবের হাত দুটি চূর্ণ হোক ও সে স্বয়ং ধ্বংস হোক। (২) তার ধনসম্পদ তার কোন কাজেই এল না, অনুরূপ তার উপার্জন। (৩) সে খুব শিগগিরই লেলিহান আগুনে প্রবেশ করবে, (৪) এবং তার স্ত্রীও, যে আগুনের ইন্ধন বা লাকড়ি বহন করে। (৫) তার গলদেশে পাকানো রজ্জু বাঁধানো আছে।
আবদুল মোত্তালেবের অন্যতম পুত্র তথা মহানবীর অন্যতম চাচা আবু লাহাব ছিল মক্কার শীর্ষস্থানীয় অভিজাত ও সম্পদশালী ব্যক্তি। ইসলাম-প্রচারের সূচনা-লগ্ন থেকেই আবু লাহাব ইসলামের কঠোর বিরোধিতায় জড়িত হয়। ইসলামের সবচেয়ে বড় কয়েকজন শত্রুর অন্যতম এই ব্যক্তি মহানবী(সা)-কে মিথ্যাবাদী বলে অপবাদ দিত ও অন্য মুশরিকদের চেয়েও মহানবীকে বেশি কষ্ট দিত ও হয়রানি করত।
সুরা লাহাবের উচ্চারণ সহ বাংলা অনুবাদ নিয়ে বিস্তারিত :
আরও দেখুনঃ