সূরা ত্বোয়া-হা পার্ট-৬ [মাক্কী সুরা ] সূরা ২০। কুরআন । সূরা ত্বোয়া-হা , (আরবি: سورة طه, (ত্বোয়া-হা) মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের বিংশ সূরা। এই সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এর আয়াত সংখ্যা ১৩৫ টি।
সূরা ত্বোয়া-হা পার্ট-৬
সূরা ত্বোয়া-হা
সূরা ত্বোয়া-হা (আয়াত ১১৭)
অতঃপর আমি বললামঃ হে আদম, এ তোমার ও তোমার স্ত্রীর শত্রু, সুতরাং সে যেন বের করে না দেয় তোমাদের জান্নাত থেকে। তাহলে তোমরা কষ্টে পতিত হবে।
Then We said: ”O Adam! Verily, this is an enemy to you and to your wife. So let him not get you both out of Paradise, so that you be distressed in misery.
فَقُلْنَا يَا آدَمُ إِنَّ هَذَا عَدُوٌّ لَّكَ وَلِزَوْجِكَ فَلَا يُخْرِجَنَّكُمَا مِنَ الْجَنَّةِ فَتَشْقَى
Faqulna ya adamu inna hatha AAaduwwun laka walizawjika fala yukhrijannakuma mina aljannati fatashqa
YUSUFALI: Then We said: “O Adam! verily, this is an enemy to thee and thy wife: so let him not get you both out of the Garden, so that thou art landed in misery.
PICKTHAL: Therefor we said: O Adam! This is an enemy unto thee and unto thy wife, so let him not drive you both out of the Garden so that thou come to toil.
SHAKIR: So We said: O Adam! This is an enemy to you and to your wife; therefore let him not drive you both forth from the garden so that you should be unhappy;
KHALIFA: We then said, “O Adam, this is an enemy of you and your wife. Do not let him evict you from Paradise, lest you become miserable.
রুকু – ৭
১১৬। যখন আমি ফেরেশতাদের বলেছিলাম,” আদমকে সেজ্দা কর।” তারা [ সকলেই ] সেজ্দা করলো , কিন্তু ইব্লীস করলো না। সে অস্বীকার করলো।
১১৭। অতঃপর আমি বললাম, ” হে আদম ! অবশ্যই সে তোমার ও তোমার স্ত্রীর শত্রু। সুতারাং তোমাদের জান্নাত থেকে বের করে দিতে তাকে [ প্রশয় ] দিও না। তাহলে তোমরা দুঃখ কষ্টের মাঝে নিপতিত হবে ২৬৪১।
২৬৪১। উপরের টিকাতে দ্রষ্টব্য। হযরত আদমের কাহিনীর মাধ্যমে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে মানুষের স্বাভাবিক দুর্বলতার প্রতি। সাধারণ মানুষ লোভের বশবর্তী হয়ে খুব সহজেই শয়তানের খপ্পরে নিজেকে সমর্পন করে। যদিও তাঁকে পূর্বে সাবধান করা হয়ে থাকে কিন্তু লোভ-লালসার সর্বগ্রাসী ক্ষুধা তাকে সঠিক পথে চলতে বাঁধার সৃষ্টি করে। সে শয়তানের নিকট আত্মসমর্পন করে।
সূরা ত্বোয়া-হা (আয়াত ১১৮)
তোমাকে এই দেয়া হল যে, তুমি এতে ক্ষুধার্ত হবে না এবং বস্ত্রহীণ হবে না।
Verily, you have (a promise from Us) that you will never be hungry therein nor naked.
إِنَّ لَكَ أَلَّا تَجُوعَ فِيهَا وَلَا تَعْرَى
Inna laka alla tajooAAa feeha wala taAAra
YUSUFALI: “There is therein (enough provision) for thee not to go hungry nor to go naked,
PICKTHAL: It is (vouchsafed) unto thee that thou hungerest not therein nor art naked,
SHAKIR: Surely it is (ordained) for you that you shall not be hungry therein nor bare of clothing;
KHALIFA: “You are guaranteed never to hunger therein, nor go unsheltered.
১১৮। ” তুমি যাতে ক্ষুধার্ত না হও সে জন্য সেখানে [ প্রচুর খাদ্য সম্ভার ] থাকবে এবং তোমরা [ সেখানে ] নগ্নও থাকবে না ২৬৪২।
১১৯। ” সেখানে তৃষ্ণার্ত হবে না বা রৌদ্র ক্লিষ্টও হবে না। ”
২৬৪২। এই আয়াতের মাধ্যমে মনুষ্য চরিত্রের এক বিশেষ দিককে উম্মোচন করা হয়েছে হযরত আদমের উদাহরণের মাধ্যমে। হযরত আদমকে আল্লাহ্ মানুষের মৌলিক যে চাহিদা, খাদ্য, পানীয়, এবং আরামদায়ক বাসস্থানের সুবন্দোবস্ত করে ছিলেন এবং সেই সাথে সাবধান করে দিলেন যে শয়তান তার আজন্ম শত্রু।
তার ফাঁদে যেনো হযরত আদম পা না দেন। কিন্তু হযরত আদম আল্লাহ্র দেয়া সকল নেয়ামত ভোগ করা সত্বেও, জীবন ধারণের জন্য কোন মৌলিক অভাববোধ না থাকা সত্ত্বেও অলীক ও অভূতপূর্ব জিনিষ পাওয়ার আশায় শয়তানের ফাঁদে পা দেন , এখানে শয়তানের ফাঁদ ছিলো ” লোভ”।
সমাজে যারা প্রতিষ্ঠিত ও ঐশ্বর্যবান। তাদের আরাম আয়েশের কোনও অভাব নাই। তবুও প্রতি নিয়ত এসব মানব সন্তান লোভের ফাঁদে পা দেয়। স্বার্থপরতা তাকে আরও লোভী করে তোলে। আরও পাওয়ার আশায় সে আকণ্ঠ পাপে ডুবে যায়। এ কথা শুধু বিত্তবান ও প্রভাবশালীদের জন্য প্রযোজ্য নয়।
এ কথা প্রযোজ্য সকল মনুষ্য সমাজের জন্য। সৃষ্টির আদিলগ্ন থেকে অদ্যাবধি ধনী, গরীব সকলেই শয়তানের লোভের ফাঁদে বন্দী।
উপদেশ : লোভ মানুষকে ধ্বংস করে।
সূরা ত্বোয়া-হা (আয়াত ১১৯)
এবং তোমার পিপাসাও হবে না এবং রৌদ্রেও কষ্ট পাবে না।
And you (will) suffer not from thirst therein nor from the sun’s heat.
وَأَنَّكَ لَا تَظْمَأُ فِيهَا وَلَا تَضْحَى
Waannaka la tathmao feeha wala tadha
YUSUFALI: “Nor to suffer from thirst, nor from the sun’s heat.”
PICKTHAL: And that thou thirstest not therein nor art exposed to the sun’s heat.
SHAKIR: And that you shall not be thirsty therein nor shall you feel the heat of the sun.
KHALIFA: “Nor will you thirst therein, nor suffer from any heat.”
১১৮। ” তুমি যাতে ক্ষুধার্ত না হও সে জন্য সেখানে [ প্রচুর খাদ্য সম্ভার ] থাকবে এবং তোমরা [ সেখানে ] নগ্নও থাকবে না ২৬৪২।
১১৯। ” সেখানে তৃষ্ণার্ত হবে না বা রৌদ্র ক্লিষ্টও হবে না। ”
২৬৪২। এই আয়াতের মাধ্যমে মনুষ্য চরিত্রের এক বিশেষ দিককে উম্মোচন করা হয়েছে হযরত আদমের উদাহরণের মাধ্যমে। হযরত আদমকে আল্লাহ্ মানুষের মৌলিক যে চাহিদা, খাদ্য, পানীয়, এবং আরামদায়ক বাসস্থানের সুবন্দোবস্ত করে ছিলেন এবং সেই সাথে সাবধান করে দিলেন যে শয়তান তার আজন্ম শত্রু।
তার ফাঁদে যেনো হযরত আদম পা না দেন। কিন্তু হযরত আদম আল্লাহ্র দেয়া সকল নেয়ামত ভোগ করা সত্বেও, জীবন ধারণের জন্য কোন মৌলিক অভাববোধ না থাকা সত্ত্বেও অলীক ও অভূতপূর্ব জিনিষ পাওয়ার আশায় শয়তানের ফাঁদে পা দেন , এখানে শয়তানের ফাঁদ ছিলো ” লোভ”।
সমাজে যারা প্রতিষ্ঠিত ও ঐশ্বর্যবান। তাদের আরাম আয়েশের কোনও অভাব নাই। তবুও প্রতি নিয়ত এসব মানব সন্তান লোভের ফাঁদে পা দেয়। স্বার্থপরতা তাকে আরও লোভী করে তোলে। আরও পাওয়ার আশায় সে আকণ্ঠ পাপে ডুবে যায়। এ কথা শুধু বিত্তবান ও প্রভাবশালীদের জন্য প্রযোজ্য নয়। এ কথা প্রযোজ্য সকল মনুষ্য সমাজের জন্য। সৃষ্টির আদিলগ্ন থেকে অদ্যাবধি ধনী, গরীব সকলেই শয়তানের লোভের ফাঁদে বন্দী।
উপদেশ : লোভ মানুষকে ধ্বংস করে।
সূরা ত্বোয়া-হা (আয়াত ১২০)
অতঃপর শয়তান তাকে কুমন্ত্রনা দিল, বললঃ হে আদম, আমি কি তোমাকে বলে দিব অনন্তকাল জীবিত থাকার বৃক্ষের কথা এবং অবিনশ্বর রাজত্বের কথা?
Then Shaitân (Satan) whispered to him, saying : ”O Adam! Shall I lead you to the Tree of Eternity and to a kingdom that will never waste away?”
فَوَسْوَسَ إِلَيْهِ الشَّيْطَانُ قَالَ يَا آدَمُ هَلْ أَدُلُّكَ عَلَى شَجَرَةِ الْخُلْدِ وَمُلْكٍ لَّا يَبْلَى
Fawaswasa ilayhi alshshaytanu qala ya adamu hal adulluka AAala shajarati alkhuldi wamulkin la yabla
YUSUFALI: But Satan whispered evil to him: he said, “O Adam! shall I lead thee to the Tree of Eternity and to a kingdom that never decays?”
PICKTHAL: But the devil whispered to him, saying: O Adam! Shall I show thee the tree of immortality and power that wasteth not away?
SHAKIR: But the Shaitan made an evil suggestion to him; he said: O Adam! Shall I guide you to the tree of immortality and a kingdom which decays not?
KHALIFA: But the devil whispered to him, saying, “O Adam, let me show you the tree of eternity and unending kingship.”
১২০। কিন্তু শয়তান তাকে কুমন্ত্রণা দিল, ” হে আদম! আমি কি তোমাকে অনন্ত জীবন দানকারী বৃক্ষের কথা ও এমন রাজ্যের কথা বলবো যা কখনও ক্ষয় হয় না” ২৬৪৩।
২৬৪৩। হযরত আদমের কাছে শয়তানের প্রতারণামূলক প্রস্তাব ছিলো সুক্ষ কৌশলে ভরা। সচারচর যেমনটি হয়ে থাকে। যদিও শয়তানের কুমন্ত্রণা ছিলো মিথ্যার বেসাতি কিন্তু আপাতঃদৃষ্টিতে তা ছিলো ন্যায়সঙ্গত ও লোভনীয়। মিথ্যা এই কারণে যে ১) শয়তানের কুমন্ত্রণায় হযরত আদম বিভ্রান্ত হন যে বেহেশতের বাগানের সুখ শান্তি চিরস্থায়ী নয় তা ক্ষণস্থায়ী, পৃথিবীর জীবনের ন্যায়।
সুতারাং হযরত আদম অনন্ত সুখের ঠিকানার লোভে শয়তানের ফাঁদে পা দেন। ২) তাদের অক্ষয় রাজ্যপাটের প্রলোভন দেখানো হলো , রাজ্যপাট অর্থাৎ অসীম ক্ষমতা। শয়তান আদমকে দুটো জিনিষের লোভ দেখিয়েছিলো প্রথমতঃ অনন্ত অসীম সুখের জীবন ও দ্বিতীয়তঃ অসীম ক্ষমতা। সৃষ্টির সেই আদি থেকে অদ্যাবধি মানুষ জাগতিক সুখ ও ক্ষমতার পিছনে ছুটে বেড়াচ্ছে।
কিন্তু এ দুটো তার জীবনে স্থায়ী সুখের পরিবর্তে দুঃখের পরিমাণ বাড়ায়। বিপথে চালনার জন্য এটা শয়তানের এক ধরনের টোপ বৈকি, কারণ ১) আদমকে আল্লাহ্ অনন্ত সুখের জীবনের কথা কিছুই বলেন নাই। কারণ তারা অনন্ত জীবন সম্বন্ধে কিছুই জানতেন না, তবুও তারা লোভের ফাঁদে পা দেন। ২) খ্যাতির আকাঙ্খা ও অন্যের প্রতি আধিপত্যের মনোভাব থেকে ক্ষমতার মোহ জন্মায়। এই মোহের মনোমুগ্ধকর আকর্ষণ ব্যক্তিকে ক্ষমতার জন্য বিপথে চালিত করতে প্রয়াস পায়।
উপদেশ : সৃষ্টির সেই আদি থেকে অদ্যাবধি মানুষ শয়তানের সৃষ্ট এই দ্বিবিধ ফাঁদে ধরা পড়ে নিজের সর্বনাশ নিজে ডেকে আনে।
সূরা ত্বোয়া-হা (আয়াত ১২১)
অতঃপর তারা উভয়েই এর ফল ভক্ষণ করল, তখন তাদের সামনে তাদের লজ্জাস্থান খুলে গেল এবং তারা জান্নাতের বৃক্ষ-পত্র দ্বারা নিজেদেরকে আবৃত করতে শুরু করল। আদম তার পালনকর্তার অবাধ্যতা করল, ফলে সে পথ ভ্রষ্ঠ হয়ে গেল।
Then they both ate of the tree, and so their private parts appeared to them, and they began to stick on themselves the leaves from Paradise for their covering. Thus did Adam disobey his Lord, so he went astray.
فَأَكَلَا مِنْهَا فَبَدَتْ لَهُمَا سَوْآتُهُمَا وَطَفِقَا يَخْصِفَانِ عَلَيْهِمَا مِن وَرَقِ الْجَنَّةِ وَعَصَى آدَمُ رَبَّهُ فَغَوَى
Faakala minha fabadat lahuma saw-atuhuma watafiqa yakhsifani AAalayhima min waraqi aljannati waAAasa adamu rabbahu faghawa
YUSUFALI: In the result, they both ate of the tree, and so their nakedness appeared to them: they began to sew together, for their covering, leaves from the Garden: thus did Adam disobey his Lord, and allow himself to be seduced.
PICKTHAL: Then they twain ate thereof, so that their shame became apparent unto them, and they began to hide by heaping on themselves some of the leaves of the Garden. And Adam disobeyed his Lord, so went astray.
SHAKIR: Then they both ate of it, so their evil inclinations became manifest to them, and they both began to cover themselves with leaves of the garden, and Adam disobeyed his Lord, so his life became evil (to him).
KHALIFA: They ate from it, whereupon their bodies became visible to them, and they tried to cover themselves with the leaves of Paradise. Adam thus disobeyed his Lord, and fell.
১২১। ফলে তারা উভয়েই বৃক্ষ থেকে [ ফল ] ভক্ষণ করলো। সুতারাং তাদের নিকট তাদের নগ্নতা প্রকাশ পেল ২৬৪৪। তারা নিজেদের আবৃত করার জন্য উভয়েই বেহেশতের বাগানের বৃক্ষপত্র সেলাই করতে আরম্ভ করলো। এ ভাবেই আদম তার প্রভুকে অমান্য করেছিলো এবং নিজেকে পাপ পথে প্রলুব্ধ করেছিলো ২৬৪৫।
২৬৪৪। ” তারা উভয়েই বৃক্ষ থেকে ভক্ষণ করলো ” – অর্থাৎ গাছের ফল ভক্ষণ করলেন। এই ফল ভক্ষণের পূর্বে তাদের পাপ কাজ সম্বন্ধে কোনরূপ ধারণাই ছিলো না। তাঁরা ছিলেন নিষ্পাপ। এখন আল্লাহ্র আদেশ অমান্য করার অপরাধ তাদের আত্মাকে গ্রাস করে ফেললো। তাঁদের আত্মা কলঙ্কিত হয়ে গেলো। ” নগ্নতা প্রকাশ পেল ” অর্থাৎ তাঁদের পোষাক ছিন্নভিন্ন হয় গেলো এবং নগ্নতা প্রকাশ পেলো। আক্ষরিক অর্থে তাদের আদিম রীপু যৌনতার প্রকাশ ঘটে যা এতদিন তাদের নিকট অজ্ঞাত ছিলো।
“নগ্নতা প্রকাশ পেল ” বাক্যটি যদি আলঙ্কারিক বা উপমার্থে ব্যবহার করি তবে এর অর্থ দাঁড়াবে আল্লাহ্র হুকুম অস্বীকার করার ফলে তাদের পূণ্যের আবরণ বা পোষাক ছিড়ে যায় বা বেহেশতের পোষাক ছিনিয়ে নেয়া হয়। আত্মা অপবিত্র হয়ে পড়ে এবং অপবিত্র আত্মার বিভৎস রূপ বা পাপের বিভিন্ন রূপ তাদের সামনে উলঙ্গভাবে প্রকাশ লাভ করে।
তারা বৃক্ষপত্র দ্বারা নিজেদের আবৃত করতে লাগল। আক্ষরিক অর্থে এখানে মানুষের স্বাভাবিক প্রবণতাকেই বর্ণনা করা হয়েছে। মানুষ সর্বদা নিজের পাপের কাজকে সর্ব সমক্ষে প্রকাশ না করে গোপন রাখতে ব্যস্ত থাকে। হযরত আদমও সেই চেষ্টাই করেছিলেন।
২৬৪৫। হযরত আদম আমাদের আদি পিতা। আল্লাহ্ তাকে ” সীমিত আকারে স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি ” দান করেছিলেন ভালোকে গ্রহণ করা ও মন্দকে বর্জন করার পূর্ণ স্বাধীনতা তাঁর ছিলো। কিন্তু তিনি তার এই স্বাধীনতার অপব্যবহার করেন। এই অপব্যবহারের ফলে তিনি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যেতেন, যদি না আল্লাহ্র রহমত তাকে উদ্ধার করতো। আল্লাহ্ তাঁর অনুতাপ গ্রহণ করেন এবং আল্লাহ্ তাঁকে বিশেষ নেয়ামতে ধন্য করেন। তাঁকে মনোনীত করেন। দেখুন পরের আয়াতে।
সূরা ত্বোয়া-হা (আয়াত ১২২)
এরপর তার পালনকর্তা তাকে মনোনীত করলেন, তার প্রতি মনোযোগী হলেন এবং তাকে সুপথে আনয়ন করলেন।
Then his Lord chose him, and turned to him with forgiveness, and gave him guidance.
ثُمَّ اجْتَبَاهُ رَبُّهُ فَتَابَ عَلَيْهِ وَهَدَى
Thumma ijtabahu rabbuhu fataba AAalayhi wahada
YUSUFALI: But his Lord chose him (for His Grace): He turned to him, and gave him Guidance.
PICKTHAL: Then his Lord chose him, and relented toward him, and guided him.
SHAKIR: Then his Lord chose him, so He turned to him and guided (him).
KHALIFA: Subsequently, his Lord chose him, redeemed him, and guided him.
১২২। কিন্তু তাঁর প্রভু [ অনুগ্রহের জন্য ] তাকে মনোনীত করেছিলেন। তিনি তার দিকে ফিরলেন এবং তাঁকে পথ নির্দ্দেশ দান করলেন।
১২৩। তিনি বলেছিলেন, ” তোমরা উভয়েই একই সঙ্গে জান্নাত থেকে নেমে যাও; তোমরা পরস্পর পরস্পরের শত্রু ২৬৪৬। যদি আমার পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট পথ নির্দ্দেশ আসে, যে আমার পথ নির্দ্দেশ অনুসরণ করবে নিশ্চয়ই সে পথ হারাবে না , বা দুঃখ কষ্ট পাবে না ২৬৪৭।
২৬৪৬। “Ihbita” উভয়ে নামিয়া যাও। এখানে উভয়ে অর্থাৎ আদম ও হাওয়া যারা আমাদের পূর্বপুরুষ ছিলেন। অনেকের মতে উভয় অর্থ আদম ও শয়তান। [ ২ : ৩৮ ] আয়াতে “Ihbitu” হচ্ছে বহুবচন যা ব্যবহার করা হয়েছে শয়তান ও মানুষ সকলের জন্য। এখানে মানুষ অর্থ সকল মনুষ্য সম্প্রদায়।
কিন্তু শয়তান তো পূর্বেই বেহেশত থেকে বিতাড়িত হয়েছে। সুতারাং বেহেশতে শুধুমাত্র দুজনেরই থাকার অধিকার ছিলো। হযরত আদম ও বিবি হাওয়া। তাহলে এখানে আদম ও বিবি হাওয়াকে সম্বোধন করা হয়েছে। ইংরেজী অনুবাদ হয়েছে : He said, “get ye down,/ Both of you all together,/ From the garden, with enmity/ One to another” একই সঙ্গে “সকলে” শব্দটি দ্বারা শয়তানকে অন্তর্গত করা হয়েছে।
এবং ” পরস্পরের শত্রু ” বাক্যটি দ্বারা মানুষ ও শয়তানের মাঝে অনন্তকাল স্থায়ী শত্রুতাকে বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ মানুষের সুপ্রবৃত্তির ও কুপ্রবৃত্তির সংগ্রামকে বোঝানো হয়েছে।
২৬৪৭। যে আল্লাহ্র নির্দ্দেশ অনুসরণ করবে, সে বিপথগামী হবে না বা পাপে আসক্ত হবে না, এবং পরিণামে হতাশা ও দুঃখ কষ্ট থেকে রক্ষা পাবে। আয়াতে [ ২ : ৩৮ ] সম্বোধন করা হয়েছে বহুবচনে, ” যাহারা আমার সৎ পথের নির্দ্দেশ অনুসরণ করবে”। এই আয়াতে একবচনে, ” যে আমার পথ অনুসরণ করিবে।” একবচনে সম্বোধন করা হলেও এর বক্তব্য সকলের জন্যই প্রযোজ্য।
সূরা ত্বোয়া-হা (আয়াত ১২৫)
সে বলবেঃ হে আমার পালনকর্তা আমাকে কেন অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করলেন? আমি তো চক্ষুমান ছিলাম।
He will say:”O my Lord! Why have you raised me up blind, while I had sight (before).”
قَالَ رَبِّ لِمَ حَشَرْتَنِي أَعْمَى وَقَدْ كُنتُ بَصِيرًا
Qala rabbi lima hashartanee aAAma waqad kuntu baseeran
YUSUFALI: He will say: “O my Lord! why hast Thou raised me up blind, while I had sight (before)?”
PICKTHAL: He will say: My Lord! Wherefor hast Thou gathered me (hither) blind, when I was wont to see?
SHAKIR: He shall say: My Lord! why hast Thou raised me blind and I was a seeing one indeed?
KHALIFA: He will say, “My Lord, why did you summon me blind, when I used to be a seer?”
১২৫। সে বলবে, ” হে আমার প্রভু! কেন তুমি আমাকে দৃষ্টিহীন ভাবে উত্থিত করলে, যখন [ পূর্বে ] আমার দৃষ্টিশক্তি ছিলো ? ” ২৬৪৯।
২৬৪৯। এই পৃথিবীতে আল্লাহ্ আদম সন্তানকে পঞ্চ ইন্দ্রিয় শোভিত করে প্রেরণ করেন। এই পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে সে পার্থিব জ্ঞান লাভ করে। আর এই পার্থিব জ্ঞান আল্লাহ্র প্রদর্শিত পথে পরিশুদ্ধ হয়ে ব্যক্তির জীবনে বিবেকের জন্ম দেয়।
সে আল্লাহ্র প্রদর্শিত পথে থেকে ন্যায় – অন্যায় , সত্য – মিথ্যা , ভালো – মন্দ ও পূণ্য – পাপের মধ্যে পার্থক্য করতে শেখে। এই হচ্ছে বিবেক বা অন্তর্দৃষ্টি বা আত্মার চক্ষু। পৃথিবীতে বিবেকহীন ব্যক্তিরও শারিরীক চক্ষু বিদ্যমান। সে ভুলে যায় এই চক্ষু তাকে দান করা হয়েছে তাকে পরীক্ষার জন্য।
কিভাবে সে এই পৃথিবীতে তার চক্ষুকে ব্যবহার করে অন্তর্দৃষ্টি লাভ করে তা পরীক্ষার জন্য। যদি সে এই পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়, তবে মৃত্যুর সাথে সাথে সে যখন জাগতিক দৃষ্টি থেকে বঞ্চিত হবে, পরকালের জন্য সে হবে অন্ধ সদৃশ্য, কারণ পৃথিবীতে সে ছিলো অন্তর্দৃষ্টি হীন।
সূরা ত্বোয়া-হা (আয়াত ১২৬)
আল্লাহ বলবেনঃ এমনিভাবে তোমার কাছে আমার আয়াতসমূহ এসেছিল, অতঃপর তুমি সেগুলো ভুলে গিয়েছিলে। তেমনিভাবে আজ তোমাকে ভুলে যাব।
(Allâh) will say: ”Like this, Our Ayât (proofs, evidences, verses, lessons, signs, revelations, etc.) came unto you, but you disregarded them (i.e. you left them, did not think deeply in them, and you turned away from them), and so this Day, you will be neglected (in the Hell-fire, away from Allâh’s Mercy).”
قَالَ كَذَلِكَ أَتَتْكَ آيَاتُنَا فَنَسِيتَهَا وَكَذَلِكَ الْيَوْمَ تُنسَى
Qala kathalika atatka ayatuna fanaseetaha wakathalika alyawma tunsa
YUSUFALI: (Allah) will say: “Thus didst Thou, when Our Signs came unto thee, disregard them: so wilt thou, this day, be disregarded.”
PICKTHAL: He will say: So (it must be). Our revelations came unto thee but thou didst forget them. In like manner thou art forgotten this Day.
SHAKIR: He will say: Even so, Our communications came to you but you neglected them; even thus shall you be forsaken this day.
KHALIFA: He will say, “Because you forgot our revelations when they came to you, you are now forgotten.”
১২৬। [আল্লাহ্ ] বলবেন, ” যখন আমার নিদর্শনসমূহ তোমার নিকট এসেছিলো , এভাবেই তুমি তা অগ্রাহ্য করেছিলে ২৬৫০।
২৬৫০। পৃথিবীতে যে বান্দা ইচ্ছাকৃত ভাবে আল্লাহ্র নিদর্শন সমূহকে অস্বীকার করে, সে ইচ্ছাকৃত ভাবেই অনুগ্রহ সমূহ বর্জন করে, ফলে পরলোকেও সে আল্লাহ্র অনুগ্রহ সমূহ অনুধাবনে অক্ষম হবে এবং আল্লাহ্র রহমত বঞ্চিত হবে। “এই ভাবেই তুমি তা অগ্রাহ্য করেছিলে ”
বাক্যটি তাৎপর্যপূর্ণ। আল্লাহ্র নৈকট্য লাভের ইচ্ছা এবং আল্লাহ্র অনুগ্রহ আত্মার মাঝে অনুধাবন করা এ সবই পূণ্যাত্মা লোকের আত্মপ্রকাশ। পৃথিবী থেকেই পূণ্যাত্মাদের আল্লাহ্র অনুগ্রহকে অনুধাবনের ক্ষমতা জন্মে এবং তারা এ কারণে আল্লাহ্র দরবারে কৃতজ্ঞ থাকেন।
এই নশ্বর দেহ ত্যাগ করে মৃত্যুর সিংহদুয়ার অতিক্রম করার পরেও তাদের আত্মার এই অবস্থা বর্তমান থাকে এবং আল্লাহ্র অপার করুণাতে তা বৃদ্ধি পায়। অপর পক্ষে যারা আল্লাহকে এবং আল্লাহ্র নিদর্শন ও রহমতকে এই পৃথিবীতে সনাক্ত করতে অক্ষম ছিলো ,
যারা ছিলো এ সম্বন্ধে বিস্মৃত – তাদের আত্মায় মৃত্যুর পরেও সেই বিস্মৃতি বিরাজ করবে। কারণ পৃথিবী থেকে পরলোকে আত্মার যাত্রা অবিচ্ছিন্ন ও ধারাবাহিক। পৃথিবীর অভিজ্ঞতাই সে পরলোকে বহন করে নেবে তার আত্মার মাঝে।
সূরা ত্বোয়া-হা (আয়াত ১২৭)
এমনিভাবে আমি তাকে প্রতিফল দেব, যে সীমালঙ্ঘন করে এবং পালনকর্তার কথায় বিশ্বাস স্থাপন না করে। তার পরকালের শাস্তি কঠোরতর এবং অনেক স্থায়ী।
And thus do We requite him who transgresses beyond bounds [i.e. commits the great sins and disobeys his Lord (Allâh) and believes not in His Messengers, and His revealed Books, like this Qur’ân, etc.], and believes not in the Ayât (proofs, evidences, verses, lessons, signs, revelations, etc.) of his Lord, and the torment of the Hereafter is far more severe and more lasting.
وَكَذَلِكَ نَجْزِي مَنْ أَسْرَفَ وَلَمْ يُؤْمِن بِآيَاتِ رَبِّهِ وَلَعَذَابُ الْآخِرَةِ أَشَدُّ وَأَبْقَى
Wakathalika najzee man asrafa walam yu/min bi-ayati rabbihi walaAAathabu al-akhirati ashaddu waabqa
YUSUFALI: And thus do We recompense him who transgresses beyond bounds and believes not in the Signs of his Lord: and the Penalty of the Hereafter is far more grievous and more enduring.
PICKTHAL: Thus do We reward him who is prodigal and believeth not the revelations of his Lord; and verily the doom of the Hereafter will be sterner and more lasting.
SHAKIR: And thus do We recompense him who is extravagant and does not believe in the communications of his Lord, and certainly the chastisement of the hereafter is severer and more
KHALIFA: We thus requite those who transgress and refuse to believe in the revelations of their Lord. The retribution in the Hereafter is far worse and everlasting.
১২৭। যে সীমালংঘন করে ও তার প্রতিপালকের নিদর্শনে বিশ্বাস স্থাপন করে না, এভাবেই আমি তাকে প্রতিফল দেই। এবং পরলোকের শাস্তি হবে আরও ভয়াবহ এবং অধিক স্থায়ী ২৬৫১।
২৬৫১। এই পৃথিবীর জীবন পরকালের জীবনের শিক্ষানবীশকাল মাত্র। পৃথিবীতে আত্মার যে অভিজ্ঞতা তাই সে পরলোকে বহন করে নিয়ে যাবে। উপরের আয়াতগুলির মাধ্যমে এ কথারই সত্যতাকে বিবৃত করা হয়েছে। যে ইহকালে আল্লাহ্র নিদর্শনের প্রতি অন্ধ সে পরকালেও অন্ধরূপেই স্রষ্টার নিকট নীত হবে। আর সে অন্ধত্ব হবে “কঠিনতর এবং অধিক স্থায়ী “।
“অধিক স্থায়ী “। এই বাক্যটির অর্থ ইহকালের জীবন ক্ষণস্থায়ী। নির্দ্দিষ্ট মেয়াদান্তে তার সমাপ্তি ঘটে। সুতারাং পার্থিব জীবনের চক্ষুহীনতা বা অন্ধত্বও ক্ষণস্থায়ী। সে তুলনায় পরলোকের জীবন অনন্ত ও সীমাহীন। সেই সীমাহীন জীবনের সীমাহীন অন্ধত্ব অবশ্যই কঠিনতর হবে।
সূরা ত্বোয়া-হা (আয়াত ১২৮)
আমি এদের পূর্বে অনেক সম্প্রদায়কে ধবংস করেছি। যাদের বাসভুমিতে এরা বিচরণ করে, এটা কি এদেরকে সৎপথ প্রদর্শন করল না? নিশ্চয় এতে বুদ্ধিমানদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে।
Is it not a guidance for them (to know) how many generations We have destroyed before them, in whose dwellings they walk? Verily, in this are signs indeed for men of understanding.
أَفَلَمْ يَهْدِ لَهُمْ كَمْ أَهْلَكْنَا قَبْلَهُم مِّنَ الْقُرُونِ يَمْشُونَ فِي مَسَاكِنِهِمْ إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَاتٍ لِّأُوْلِي النُّهَى
Afalam yahdi lahum kam ahlakna qablahum mina alqurooni yamshoona fee masakinihim inna fee thalika laayatin li-olee alnnuha
YUSUFALI: Is it not a warning to such men (to call to mind) how many generations before them We destroyed, in whose haunts they (now) move? Verily, in this are Signs for men endued with understanding.
PICKTHAL: Is it not a guidance for them (to know) how many a generation We destroyed before them, amid whose dwellings they walk? Lo! therein verily are signs for men of thought.
SHAKIR: Does it not then direct them aright how many of the generations In whose dwelling-places they go about We destroyed before them? Most surely there are signs in this for those endowed with understanding.
KHALIFA: Does it ever occur to them how many previous generations we have annihilated? They are now walking in the homes of those before them. These are signs for those who possess intelligence.
১২৮। এসব লোকের জন্য এটা কি সাবধান বাণী ছিলো না যে, তাদের পূর্বে কত মানব গোষ্ঠিকে আমি ধ্বংস করেছি, যাদের বাসভূমিতে তারা [ এখন ] বিচরণ করে ? অবশ্যই যারা বুঝতে পারে, তাদের জন্য এতে রয়েছে নিদর্শন ২৬৫২।
২৬৫২। ” যারা বুঝতে পারে, ” এই বাক্যটি পূর্বেও ব্যবহার করা হয়েছে আয়াত [ ২০ : ৫৪ ] তে। হযরত মুসা ও ফেরাউনেরর মধ্যে যে যুক্তি তর্কের অবতারণা ঘটেছিলো তারই সমাপ্তি পর্বে এই বাক্যটির উল্লেখ করা হয়েছে। ফেরাউন অন্ধ বিদ্বেষে ক্রমাগত আল্লাহ্ নির্দ্দেশ সমূহ অস্বীকার করেছিলো – ফলে তাঁর আত্মা পাপের অন্ধকারে হারিয়ে যায়।
সে আধ্যাত্মিক অন্ধত্ব বরণ করে। ফেরাউনের আত্মিক অন্ধত্বের বর্ণনা প্রসঙ্গে উক্ত উক্তি করা হয়। কিন্তু এই আয়াতে বাক্যটির প্রয়োগ হয়েছে সার্বজনীন ভাবে, যে মানুষ ইচ্ছাকৃত ভাবে আল্লাহ্র নিদর্শনসমূহ অস্বীকার করে সার্বজনীন ভাবে তাদের পরিপ্রেক্ষিতেই উপরের বক্তব্য প্রদান করা হয়েছে। এরা হচ্ছে তারা যারা চক্ষু থাকতেও অন্ধ – অর্থাৎ বিবেকবুদ্ধি বর্জিত ফলে অন্তর্দৃষ্টিহীন।
সূরা ত্বোয়া-হা (আয়াত ১২৯)
আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে পূর্ব সিদ্ধান্ত এবং একটি কাল নির্দিষ্ট না থাকলে শাস্তি অবশ্যম্ভাবী হয়ে যেত।
And had it not been for a Word that went forth before from your Lord, and a term determined, (their punishment) must necessarily have come (in this world).
وَلَوْلَا كَلِمَةٌ سَبَقَتْ مِن رَّبِّكَ لَكَانَ لِزَامًا وَأَجَلٌ مُسَمًّى
Walawla kalimatun sabaqat min rabbika lakana lizaman waajalun musamman
YUSUFALI: Had it not been for a Word that went forth before from thy Lord, (their punishment) must necessarily have come; but there is a Term appointed (for respite).
PICKTHAL: And but for a decree that had already gone forth from thy Lord, and a term already fixed, the judgment would have been inevitable (in this world).
SHAKIR: And had there not been a word (that had) already gone forth from your Lord and an appointed term, it would surely have been made to cleave (to them).
KHALIFA: If it were not for your Lord’s predetermined plan, they would have been judged immediately.
রুকু – ৮
১২৯। যদি তোমার প্রভুর [ এদের অবকাশ দেয়ার ] পূর্ব সিদ্ধান্ত না থাকতো ,তবে [ তাদের শাস্তি ] অবশ্যই আসতো। কিন্তু তাদের [ অবকাশের জন্য ] নির্দ্দিষ্ট সময় কাল রয়েছে ২৬৫৩।
২৬৫৩। পূর্ব সিদ্ধান্ত বা পূর্ব ঘোষণার কথা পূর্বেও উল্লেখ করা হয়েছে আয়াত [ ১০ : ১৯ ] ও টিকা ১৪০৭ এবং আয়াত [ ১১ : ১১০ ] তে। বিশ্ব প্রকৃতিতে আল্লাহ্র বিধান বা আইন এমন সুনির্দ্দিষ্ট ভাবে প্রয়োগ করা আছে যার ফলে সমস্ত সৃষ্টি সমন্বিত ভাবে শৃঙ্খলার সাথে আল্লাহ্র মহৎ উদ্দেশ্যের সার্থকতার দিকে অগ্রসরমান হয়।
বিশ্ব প্রকৃতির সকল কিছুর জন্য হিতাকাঙ্খা আল্লাহ্র সুনির্দ্দিষ্ট পরিকল্পনাতে বিদ্যমান। পাপী , পূণ্যাত্মা সকলকে তিনি সমভাবে নির্দ্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য সময় ও সুযোগ দান করে থাকেন। তাঁর করুণার হস্ত সকলের জন্য সমভাবে প্রসারিত।
এই হচ্ছে আল্লাহ্র “পূর্ব সিদ্ধান্ত।” জঘন্য পাপীদের তিনি তৎক্ষণাত শাস্তি দান করেন না। তাদেরও এক নির্দ্দিষ্ট সময়কাল সময় দান করা হয়, যেনো তারা অনুতাপ করার সুযোগ পায় এবং অনুতাপের মাধ্যমে আল্লাহ্র রাস্তায় ফিরে আসে। যদি এই অবকাশ দান আল্লাহ্র পূর্ব নির্ধারিত বিধান না হতো, তবে পাপীরা তাদের পাপের শাস্তি তৎক্ষণাত লাভ করতো।
সূরা ত্বোয়া-হা (আয়াত ১৩১)
আমি এদের বিভিন্ন প্রকার লোককে পরীক্ষা করার জন্যে পার্থিবজীবনের সৌন্দর্য স্বরূপ ভোগ-বিলাসের যে উপকরণ দিয়েছি, আপনি সেই সব বস্তুর প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করবেন না। আপনার পালনকর্তার দেয়া রিযিক উৎকৃষ্ট ও অধিক স্থায়ী।
And strain not your eyes in longing for the things We have given for enjoyment to various groups of them (polytheists and disbelievers in the Oneness of Allâh), the splendour of the life of this world that We may test them thereby. But the provision (good reward in the Hereafter) of your Lord is better and more lasting.
وَلَا تَمُدَّنَّ عَيْنَيْكَ إِلَى مَا مَتَّعْنَا بِهِ أَزْوَاجًا مِّنْهُمْ زَهْرَةَ الْحَيَاةِ الدُّنيَا لِنَفْتِنَهُمْ فِيهِ وَرِزْقُ رَبِّكَ خَيْرٌ وَأَبْقَى
Wala tamuddanna AAaynayka ila ma mattaAAna bihi azwajan minhum zahrata alhayati alddunya linaftinahum feehi warizqu rabbika khayrun waabqa
YUSUFALI: Nor strain thine eyes in longing for the things We have given for enjoyment to parties of them, the splendour of the life of this world, through which We test them: but the provision of thy Lord is better and more enduring.
PICKTHAL: And strain not thine eyes toward that which We cause some wedded pairs among them to enjoy, the flower of the life of the world, that We may try them thereby. The provision of thy Lord is better and more lasting.
SHAKIR: And do not stretch your eyes after that with which We have provided different classes of them, (of) the splendor of this world’s life, that We may thereby try them; and the sustenance (given) by your Lord is better and more abiding.
KHALIFA: And do not covet what we bestowed upon any other people. Such are temporary ornaments of this life, whereby we put them to the test. What your Lord provides for you is far better, and everlasting.
১৩১। পার্থিব জীবনের জাঁকজমক দ্বারা পরীক্ষার নিমিত্তে আমি বিভিন্ন শ্রেণীকে উপভোগের যে সব উপকরণ দিয়েছি তা আকাঙ্খা করে তোমার চক্ষুদ্বয়কে পীড়িত করো না। [ মনে রেখো] তোমার প্রভুর প্রদত্ত জীবনোপকরণ উৎকৃষ্ট ও অধিক স্থায়ী ২৬৫৬।
২৫৫৬। এই পৃথিবীতে সম্পদ ,বিত্ত , ক্ষমতা, মেধা, প্রতিভা প্রভৃতি যা পৃথিবীতে সাফল্যের মাপকাঠি রূপে পরিগণিত তা সকলের মধ্যে আল্লাহ্ সমভাবে বণ্টন করেন নাই। কারও বেশী থাকলে তাতে ঈর্ষান্বিত হতে নিষেধ করা হয়েছে।
কারণ হিসেবে বলা হয়েছে , এসব আল্লাহ্ বান্দাকে দান করেন পৃথিবীতে তাকে পরীক্ষার জন্য। আল্লাহ্র বিশেষ নেয়ামতসমূহকে সে কিভাবে ব্যয় করেছে সে হিসাব তাকে দাখিল করতে হবে পরলোকে। আর এসব নেয়ামত ক্ষণস্থায়ী। পৃথিবীর ক্ষণস্থায়ী জীবন শেষে এই পৃথিবীর বিত্ত,সম্পদ, প্রভাব প্রতিপত্তি সব রেখে অনন্তলোকে যাত্রা করতে হয়। সুতারাং সবই ক্ষণস্থায়ী।
অপর পক্ষে পরকালের সাফল্য হচ্ছে স্থায়ী সাফল্য। পৃথিবীর সাফল্য একদিন শেষ হয়ে যাবে, কিন্তু পরকালের সাফল্য হচ্ছে স্থায়ী সাফল্য, যা স্বয়ং আল্লাহ্ তাঁর অনুগত বান্দাকে দান করে থাকেন। পরলোকের সাফল্য হচ্ছে অমূল্য এবং যা অনন্তকাল ব্যপী স্থায়ী। সকলকেই আল্লাহ্ তাঁর কোন না কোন নেয়ামত সমূহ দ্বারা এই পৃথিবীতে ধন্য করে থাকেন। যে বান্দা সঠিক ভাবে সেই নেয়ামত ব্যয় করতে পারে সেই পূণ্যাত্মা – আর যে না পারে সে মহাকালের অতলগর্ভে নিক্ষিপ্ত হয়।
সূরা ত্বোয়া-হা (আয়াত ১৩২)
আপনি আপনার পরিবারের লোকদেরকে নামাযের আদেশ দিন এবং নিজেও এর ওপর অবিচল থাকুন। আমি আপনার কাছে কোন রিযিক চাই না। আমি আপনাকে রিযিক দেই এবং আল্লাহ ভীরুতার পরিণাম শুভ।
And enjoin As-Salât (the prayer) on your family, and be patient in offering them [i.e. the Salât (prayers)]. We ask not of you a provision (i.e. to give Us something: money, etc.); We provide for you. And the good end (i.e. Paradise) is for the Muttaqûn (pious – see V.2:2).
وَأْمُرْ أَهْلَكَ بِالصَّلَاةِ وَاصْطَبِرْ عَلَيْهَا لَا نَسْأَلُكَ رِزْقًا نَّحْنُ نَرْزُقُكَ وَالْعَاقِبَةُ لِلتَّقْوَى
Wa/mur ahlaka bialssalati waistabir AAalayha la nas-aluka rizqan nahnu narzuquka waalAAaqibatu lilttaqwa
YUSUFALI: Enjoin prayer on thy people, and be constant therein. We ask thee not to provide sustenance: We provide it for thee. But the (fruit of) the Hereafter is for righteousness.
PICKTHAL: And enjoin upon thy people worship, and be constant therein. We ask not of thee a provision: We provided for thee. And the sequel is for righteousness.
SHAKIR: And enjoin prayer on your followers, and steadily adhere to it; We do not ask you for subsistence; We do give you subsistence, and the (good) end is for guarding (against evil).
KHALIFA: You shall enjoin your family to observe the contact prayers (Salat), and steadfastly persevere in doing so. We do not ask you for any provisions; we are the ones who provide for you. The ultimate triumph belongs to the righteous.
১৩২। তোমার পরিবারবর্গকে সালাতের আদেশ দাও এবং তাতে অবিচলিত থাক। আমি তোমার নিকট কোন প্রকার জীবনোপকরণ চাই না [ বরং ] আমিই তোমার জন্য তা সরবরাহ করে থাকি। শুভ পরিণাম পূণ্যাত্মাদের জন্য ২৬৫৭।
২৬৫৭। ” জীবনোপকরণ” – অর্থাৎ জীবনকে ধারণ করার জন্য যে সব উপকরণের প্রয়োজন হয়। আল্লাহ্ অভাবমুক্ত। তিনি কারও মুখাপেক্ষী নন। আমরা আমাদের প্রতিদিনের জীবন যাপনের জন্য জীবনোপকরণ সংগ্রহের জন্য আল্লাহ্র মুখাপেক্ষি। পূণ্যাত্মা , পাপী সকলের জীবনোপকরণ দান করেন আল্লাহ্।
“শুভ পরিণাম মুত্তাকীদের জন্য ” – শুভ পরিণাম অর্থাৎ কর্মের শেষ ফলাফল। আল্লাহ্র নেয়ামত পাপী , পূণ্যাত্মা সকলের জন্য বিদ্যমান। কিন্তু যে পূণ্যাত্মা , যে নিজের জীবনকে আল্লাহ্র রাস্তায় ব্যয় করে, পৃথিবীর কর্মফলের শেষ পরিণাম তার জন্য শুভ ফল বহন করে আনবে। কারণ পার্থিব জীবনোপকরণের সাথে সাথে পূণ্য কর্ম দ্বারা তার আধ্যাত্মিক জীবনও সমৃদ্ধি লাভ করবে। পরিণামে সে আল্লাহ্র নৈকট্য লাভে ধন্য হবে।
সূরা ত্বোয়া-হা (আয়াত ১৩৩)
এরা বলেঃ সে আমাদের কাছে তার পালনকর্তার কাছ থেকে কোন নিদর্শন আনয়ন করে না কেন? তাদের কাছে কি প্রমাণ আসেনি, যা পূর্ববর্তী গ্রন্থসমূহে আছে?
They say: ”Why does he not bring us a sign (proof) from his Lord?” Has there not come to them the proof of that which is (written) in the former papers [Scriptures, i.e. the Taurât (Torah), and the Injeel (Gospel), etc. about the coming of the Prophet Muhammad SAW ].
وَقَالُوا لَوْلَا يَأْتِينَا بِآيَةٍ مِّن رَّبِّهِ أَوَلَمْ تَأْتِهِم بَيِّنَةُ مَا فِي الصُّحُفِ الْأُولَى
Waqaloo lawla ya/teena bi-ayatin min rabbihi awa lam ta/tihim bayyinatu ma fee alssuhufi al-oola
YUSUFALI: They say: “Why does he not bring us a sign from his Lord?” Has not a Clear Sign come to them of all that was in the former Books of revelation?
PICKTHAL: And they say: If only he would bring us a miracle from his Lord! Hath there not come unto them the proof of what is in the former scriptures?
SHAKIR: And they say: Why does he not bring to us a sign from his Lord? Has not there come to them a clear evidence of what is m the previous books?
KHALIFA: They said, “If he could only show us a miracle from his Lord!” Did they not receive sufficient miracles with the previous messages?
১৩৩। তারা বলে, ” সে তাঁর প্রভুর নিকট থেকে কেন আমাদের জন্য নিদর্শন আনে না ?” ২৬৫৮। পূর্ববর্তী কিতাব সমূহের মাধ্যমে তাদের নিকট কি সুস্পষ্ট নিদর্শন আসে নাই?
২৬৫৮। অবিশ্বাসীদের শঠতাপূর্ণ ধূর্ত মানসিকতার দিকে এখানে ইঙ্গিত করা হয়েছে। কোরাণ স্বয়ং স্রষ্টার সুস্পষ্ট নিদর্শন ও প্রমাণ। যারা পূর্ববর্তী ধর্মগ্রন্থে বিশ্বাসী , তারা তাদের ধর্ম গ্রন্থেই সুস্পষ্ট প্রমাণ পেয়েছে যা তাওরাত, ইঞ্জিল ইত্যাদি।
আল্লাহ্র কিতাবে সব কালেই শেষ নবী হযরত মুহম্মদ [সা] এর নবুয়ত ও রেসালাতের সাক্ষ্য দিয়েছে তার পরেও অবিশ্বাসীরা কিভাবে কৌশল অবলম্বন করে ?
সূরা ত্বোয়া-হা (আয়াত ১৩৪)
যদি আমি এদেরকে ইতিপূর্বে কোন শাস্তি দ্বারা ধ্বংস করতাম, তবে এরা বলতঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আপনি আমাদের কাছে একজন রসূল প্রেরণ করলেন না কেন? তাহলে তো আমরা অপমানিত ও হেয় হওয়ার পূর্বেই আপনার নিদর্শন সমূহ মেনে চলতাম।
And if We had destroyed them with a torment before this (i.e. Messenger Muhammad SAW and the Qur’ân), they would surely have said: ”Our Lord! If only You had sent us a Messenger, we should certainly have followed Your Ayât (proofs, evidences, verses, lessons, signs, revelations, etc.), before we were humiliated and disgraced.”
وَلَوْ أَنَّا أَهْلَكْنَاهُم بِعَذَابٍ مِّن قَبْلِهِ لَقَالُوا رَبَّنَا لَوْلَا أَرْسَلْتَ إِلَيْنَا رَسُولًا فَنَتَّبِعَ آيَاتِكَ مِن قَبْلِ أَن نَّذِلَّ وَنَخْزَى
Walaw anna ahlaknahum biAAathabin min qablihi laqaloo rabbana lawla arsalta ilayna rasoolan fanattabiAAa ayatika min qabli an nathilla wanakhza
YUSUFALI: And if We had inflicted on them a penalty before this, they would have said: “Our Lord! If only Thou hadst sent us a messenger, we should certainly have followed Thy Signs before we were humbled and put to shame.”
PICKTHAL: And if we had destroyed them with some punishment before it, they would assuredly have said: Our Lord! If only Thou hadst sent unto us a messenger, so that we might have followed Thy revelations before we were (thus) humbled and disgraced!
SHAKIR: And had We destroyed them with chastisement before this, they would certainly have said: O our Lord! why didst Thou not send to us a messenger, for then we should have followed Thy communications before that we met disgrace and shame.
KHALIFA: Had we annihilated them before this, they would have said, “Our Lord, had You sent a messenger to us, we would have followed Your revelations, and would have avoided this shame and humiliation.”
১৩৪। যদি আমি ইতিপূর্বে তাদের উপরে শাস্তি আরোপ করতাম ২৬৫৯; তবে তারা বলতো, ” হে আমাদের প্রভু ! যদি তুমি আমাদের নিকট একজন রাসুল প্রেরণ করতে তবে লাঞ্ছিত ও অপমানিত হবার পূর্বেই তোমার নিদর্শন মেনে চলতাম।”
২৬৫৯। পূর্ববর্তী আয়াতে রসুলের প্রতি ঈমান আনার ব্যাপারে যে যুক্তির অবতারণা করা হয়েছে , তাতে প্রতীয়মান হয় যে, এ সব অবিশ্বাসীরা নিজ ধর্ম এবং ধর্মগ্রন্থের বাণীর প্রতিও বিশ্বস্ত নয়। তারা মিথ্যা দাবী করে যে, তারা পূর্ববর্তী ধর্মগ্রন্থ ও ধর্মে বিশ্বাসী। যদি তারা তাদের ধর্মগ্রন্থে বিশ্বাসই হতো, তবে তারা তাদের ধর্মগ্রন্থ পাঠের মাধ্যমেই শেষ নবীকে সনাক্ত করতে সক্ষম হতো।
তারা সত্যবাদী নয়, তারা মিথ্যাবাদী ও অবিশ্বাসী। তারা নিজের কাছে নিজে বিশ্বস্ত নয়। তাদের মিথ্যা আচরণ ও অবিশ্বস্ততার দরুণ তাদের তাৎক্ষণিক শাস্তি প্রাপ্য হয়ে যায় – যদি ন্যায় বিচার করা হয়। কিন্তু আল্লাহ্ তাদের অবকাশ দান করেন কারণ তা না হলে তারা নূতন যুক্তি তর্কের অবতারণা করবে। কারণ মিথ্যাবাদী ও অবিশ্বাসীরা সব সময়েই হয় ধূর্ত, শঠ ও কৌশলপূর্ণ।
অনুতাপ করার জন্য অবকাশ না দিলে তারা বলতো যে, “আল্লাহ্ যদি আমাদের জন্য একজন রসুল প্রেরণ করতেন তবে, আমরা ঈমান আনতাম।” কিন্তু সত্যিই যখন তারা একজন রসুলকে স্বশরীরে লাভ করলো তারা আরও প্রমাণের জন্য বায়না ধরলো এবং রসুলল্লাহকে [ সা] অপমান ও অবজ্ঞা করলো।
সূরা ত্বোয়া-হা (আয়াত ১৩৫)
বলুন, প্রত্যেকেই পথপানে চেয়ে আছে, সুতরাং তোমরাও পথপানে চেয়ে থাক। অদূর ভবিষ্যতে তোমরা জানতে পারবে কে সরল পথের পথিক এবং কে সৎপথ প্রাপ্ত হয়েছে।
Say (O Muhammad SAW): ”Each one (believer and disbeliever, etc.) is waiting, so wait you too, and you shall know who are they that are on the Straight and Even Path (i.e. Allâh’s Religion of Islâmic Monotheism), and who are they that have let themselves be guided (on the Right Path).
قُلْ كُلٌّ مُّتَرَبِّصٌ فَتَرَبَّصُوا فَسَتَعْلَمُونَ مَنْ أَصْحَابُ الصِّرَاطِ السَّوِيِّ وَمَنِ اهْتَدَى
Qul kullun mutarabbisun fatarabbasoo fasataAAlamoona man as-habu alssirati alssawiyyi wamani ihtada
YUSUFALI: Say: “Each one (of us) is waiting: wait ye, therefore, and soon shall ye know who it is that is on the straight and even way, and who it is that has received Guidance.”
PICKTHAL: Say: Each is awaiting; so await ye! Ye will come to know who are the owners of the path of equity, and who is right.
SHAKIR: Say: Every one (of us) is awaiting, therefore do await: So you will come to know who is the follower of the even path and who goes aright.
KHALIFA: Say, “All of us are waiting, so wait; you will surely find out who are on the correct path, and who are truly guided.”
১৩৫। বল, ” [ আমরা] প্রত্যেকেই অপেক্ষা করছি। সুতারাং তোমরাও অপেক্ষা কর ২৬৬০। শীঘ্রই তোমরা জানতে পারবে কারা রয়েছে সরল ও সহজ পথে এবং কারা সৎ পথের নির্দ্দেশ গ্রহণ করেছে ” ২৬৬১।
২৬৬০। যদি কিতাবধারী জাতিরা তাদের নিজেদের ধর্মগ্রন্থ সম্বন্ধে বিশ্বস্ত হতো তবে, তারা শেষ নবী হযরত মুহম্মদ মুস্তফার [ সা ] আগমন সম্বন্ধে কোন সন্দেহ পোষণ করতো না কোন যুক্তি তর্কের অবতারণা করতো না। কারণ তাদের ধর্মগ্রন্থেই শেষ নবীর আগমন সম্বন্ধে বলা হয়েছে। এরা কোন ধর্মেই বিশ্বাসী নয় – শুধু ধর্মের লেবেলধারী। এদের সম্বন্ধে কি বা বলার থাকে ?
আল্লাহ্র নবী শুধুমাত্র বলতে পারেন যে, ” আমরা প্রত্যেকেই অপেক্ষা করছি, শেষ পর্যন্ত আল্লাহ্র সত্য বা বিধানই স্থায়ীত্ব লাভ করবে ও বিরাজ করবে।” দেখুন আয়াত [ ৯ : ৫২ ] যেখানে সত্যকে প্রত্যক্ষ করার জন্য অপেক্ষা করার কথা আছে।
২৬৬১। দেখুন আয়াত [ ১৯ : ৪৩ ] যেখানে সরল ও সত্য পথের উল্লেখ আছে। সরল ও সত্য পথ হচ্ছে সৎ পথ। পৃথিবীতে সৎপথই স্থায়ীত্ব লাভ করবে – এই হচ্ছে আল্লাহ্র শ্বাশত বাণী। যারা সৎ পথে জীবন ধারণ করেন শুধুমাত্র তারাই আল্লাহ্র অনুগ্রহ লাভে সক্ষম। আল্লাহ্ স্বয়ং তাদের পথ নির্দ্দেশ দান করেন ও হেদায়েত দান করেন।
যে জীবন যাপন প্রণালীতে সত্য পথের , সরল পথের অনুসারী ,সততা ও ন্যায়নীতি যার জীবনের অঙ্গ, তার পরিশুদ্ধ ও নির্মল হৃদয়ে আল্লাহ্র হেদায়েতের আলো পরিষ্ফুট হয়। মিথ্যা ও চক্রান্তকারীরা শেষ পর্যন্ত ধ্বংস হয়ে যাবে – পৃথিবীতে একমাত্র স্থায়ী হচ্ছে ‘সত্য’ যা আল্লাহ্র নিকট থেকে আগত।
আরও দেখুনঃ