হাতির বছর উপসংহার | বংশানুক্রম এবং হাতির বছর, মহানবি মুহাম্মদের (সা) বংশের যাঁদের নিয়ে আলোচনা করলাম তাঁরা প্রত্যেকেই ইতিহাসের বিচারে তাঁদের সমাজের অগ্রগতিতে কোনো না কোনোভাবে (অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক কিংবা সামাজিক) ভূমিকা রেখেছেন। তা শুধু জমজম রূপ আবিষ্কারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। আসলে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁর রসুলের (সা) জন্য তৎকালীন সময়ের সবচেয়ে মর্যাদাবান বংশই বেছে নিয়েছিলেন। এমনকি হুনায়নের যুদ্ধের সময় রসুল (সা) বলেছিলেন, “আমিই নবি, এতে কোনো সন্দেহ নেই। এবং আমি আবদুল মুত্তালিবের বংশধর।”

হাতির বছর উপসংহার | বংশানুক্রম এবং হাতির বছর | মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ জীবন
আবদুল মুত্তালিবের মর্যাদার কথা একবার ভাবুন। তাঁর নেতৃত্বে কাবাঘর রক্ষা পেয়েছে। তিনি আল্লাহ তায়ালার নিকট প্রার্থনা করেছিলেন এবং আল্লাহ আবাবিল প্রেরণের মাধ্যমে কাবা রক্ষা করেন। তিনি জমজম কূপ পুনরায় আবিষ্কার করেছিলেন। সেই সময় আবদুল মুত্তালিবের মতো মর্যাদাবান আর কোনো নেতা আরব মুলুকে ছিল না। এই মর্যাদা শুধু তাঁর নিজের কারণে নয়, তাঁর পিতা, পিতামহ ও প্রপিতামহের জন্যও।

তাই বলা যায়, মহানবি মুহাম্মদ (সা) যে এ হেন মহান পুরুষ আবদুল মুত্তালিবের সবচেয়ে প্রিয় পুত্র আবদুল্লাহর ঔরসে জন্ম নেবেন এবং তাঁর (আবদুল মুত্তালিবের) অভিভাবকত্বে জীবনের প্রথম আটটি বছর অতিবাহিত করবেন, তা আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে তাঁকে নবি হিসেবে পাঠানোর প্রস্তুতিরই অংশবিশেষ। এখানে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আবরাহার হারাম শরিফ আক্রমণের সময় মুহাম্মদ (সা) মা আমিনার গর্ভে ছিলেন। এর কয়েক মাস পরেই তিনি জাহণ করেন। এখানেও একটি বেশ বড় প্রতীকী বিষয় আছে। তা হলো, আল্লাহ কেবল কাবাকেই রক্ষা করেননি, তিনি অনাগত নবি মুহাম্মদকেও (সা) রক্ষা করেছেন। এখানে আরেকটি বিষয়েও ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
মুশরিকরা কাবাঘরকে রক্ষা করতে পারেনি, কারণ তারা কাবাঘরের রক্ষা করার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছিল। অতএব আল্লাহ তায়ালা কাবা আক্রমণকারীদের ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। মুশরিকরা কাবার উপযুক্তও ছিল না। তার মানে এখন পৃথিবীর বুকে এমন কেউ আসবেন যিনি কাবার যোগ্য হবেন। আর সে ব্যক্তিটি হলেন আমাদের প্রিয় নবি হজরত মুহাম্মদ (সা), যিনি কাবার প্রতিমাগুলো সরিয়ে একে পবিত্র করেছিলেন। এবং কাবাকে আমাদের জন্য কিবলা বানিয়েছিলেন।
আরো পড়ুনঃ