যুদ্ধবন্দিদের সঙ্গে মুসলিমদের আচরণ | বদরের যুদ্ধ-৬, নবি করিম (সা) সাহাবিদের যুদ্ধবন্দিদের দেখভালের পাশাপাশি তাদের সঙ্গে সদয় আচরণ করার নির্দেশ দেন। সাহাবিরা তাদের সাথে কতটা সদয় আচরণ করেছিলেন তা নিয়ে ইবনে ইসহাক তার সিরাহে অনেক কাহিনি বর্ণনা করেছেন। যুদ্ধবন্দিদের মধ্যে মুসআব ইবনে উমায়েরের ভাই আবু আজিজকে কয়েকজন আনসারের দায়িত্বে রাখা হয়েছিল।

যুদ্ধবন্দিদের সঙ্গে মুসলিমদের আচরণ | বদরের যুদ্ধ-৬ | মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) জীবন
আবু আজিজ বর্ণনা করেছেন, আনসাররা খেতে বসে তাকে রুটি ও গোশত দিতেন, আর নিজেরা শুধু খেজুর ও পানি খেতেন। কারণটি আবু আজিজ নিজেই ব্যাখ্যা করেছেন: “(তাঁরা এমনটি করতেন,) যেহেতু নবি করিম (সা) তাঁদের বন্দিদের সঙ্গে সদয় আচরণ করতে বলেছেন। বিব্রত হয়ে আমি যখন সেই রুটি তাঁদের ফিরিয়ে দিতাম, তখন তাঁরা তা আবার আমাকে ফিরিয়ে দিতেন।”

বদরের যুদ্ধের পর যুদ্ধবন্দিদের প্রতি যে সদাচরণ করা হয়েছিল তা অতুলনীয়। যুদ্ধবন্দিদের সঙ্গে ভালো আচরণ করার গুরুত্ব থেকেই আধুনিক যুগে জেনেভা কনভেনশনের সৃষ্টি। পৃথিবীতে অন্য কোনো সভ্যতা-সংস্কৃতি যখন যুদ্ধবন্দিদের এই অধিকারটুকু দিচ্ছিল না তখন আমাদের শরিয়া তাদের এই অধিকার দিয়েছে। একবার ভাবুন তো, কোনো শাসক কি কখনও যুদ্ধবন্দিকে তার নিজের ঘরে থাকতে দিয়েছে? নিজে যা খেয়েছে, বন্দিদের জন্য তার চেয়ে ভালো খাবারের ব্যবস্থা করেছে?
নবি করিম (সা) কুরাইশের কাছে সংবাদ পাঠিয়েছিলেন, “বন্দিদের মুক্তির জন্য আমরা মুক্তিপণ নেব।” যুদ্ধবন্দিদের মুক্তিপণের পরিমাণ সম্পর্কে বিভিন্ন বর্ণনা আছে। সঠিক মতটি হলো, প্রত্যেক বন্দির মুক্তির জন্য একটি উপযুক্ত মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। ধনীদের যত মূল্য দিতে হয়েছিল, দরিদ্রদের দিতে হয়েছিল তার চেয়ে কম। আর দরিদ্রতম বন্দিরা কোনো কিছু না দিয়েই মুক্তি পেয়েছিল। নবিজি (সা) তাদের প্রত্যেককে ব্যক্তিগতভাবে চিনতেন, সুতরাং তাদের আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে তাঁর সম্যক ধারণা ছিল।
আরও পড়ুনঃ